নিউজিল্যান্ডে নাগরিকদের ব্যাপক হারে দেশত্যাগের প্রেক্ষাপটে সরকার রেসিডেন্সি নিয়ম সহজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদেশী দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীদের আকৃষ্ট করে দেশটির কর্মশক্তি এবং অর্থনীতি শক্তিশালী করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত এক বছরে ৭৩ হাজার ৪০০ নিউজিল্যান্ড নাগরিক দেশ ছেড়েছেন। এ প্রবণতা উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছানোয় সরকার বিদেশী কর্মীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের নিয়ম শিথিল করেছে। অর্থমন্ত্রী নিকোলা উইলিস জানিয়েছেন, নতুন নিয়মে বিদেশী কর্মীরা সহজে নিউজিল্যান্ডে কাজ ও বসবাসের সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে যেসব গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা স্থানীয় বাজারে সহজলভ্য নয়, সেসব ক্ষেত্রে বিদেশীরা বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন।
২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে চালু হতে যাওয়া দুটি নতুন রেসিডেন্সি পথ হলো- অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের জন্য রেসিডেন্সি: নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা ও বেতন সীমার শর্ত পূরণ করতে হবে। শিল্প ও প্রযুক্তি কর্মীদের জন্য রেসিডেন্সি: যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও মজুরি সীমা পূরণ করতে হবে। ইমিগ্রেশন মন্ত্রী এরিকা স্ট্যানফোর্ড বলেছেন, ‘যেসব দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মী ইতোমধ্যেই নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন, তাদের ধরে রাখতে এ নতুন উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ড সরকার একাধিক ভিসা নিয়মও সহজ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে-
ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা (জানুয়ারি ২০২৫): দূর থেকে কাজ করা ব্যক্তি ও ভ্রমণকারীদের জন্য সহজ করা হয়েছে। অ্যাকটিভ ইনভেস্টর প্লাস ভিসা বা গোল্ডেন ভিসা (ফেব্রুয়ারি ২০২৫): ধনী বিদেশীদের বিনিয়োগের মাধ্যমে রেসিডেন্সি দেয়ার শর্ত সহজ করা হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠন বিজনেস নিউজিল্যান্ড নতুন নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, এটি দক্ষ কর্মীদের ধরে রাখতে সহায়ক হবে।
তবে সরকারের জোটসঙ্গী নিউ নিউজিল্যান্ড ফার্স্ট পার্টি এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। পার্টির নেতা উইনস্টন পিটার্স বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডকে অস্ট্রেলিয়ার পথে যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা প্রশিক্ষণ দিই, পরিবারগুলোর খরচ বহন করি, তারপর তারা দেশ ছেড়ে চলে যায় ‘ সরকারি তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে যারা নিউজিল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান, তাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশই নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেননি। উইনস্টন পিটার্সের মতে, ‘আমাদের এমন একটি স্মার্ট ইমিগ্রেশন সিস্টেম প্রয়োজন যা স্থানীয় কর্মীদের ও শিল্পের চাহিদা পূরণ করবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জটিলতা তৈরি হবে।’
দ্য গার্ডিয়ান