ঝুম বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলো সিলেটেজলবায়ু পরিবর্তনজনিত কতটা ঝুঁকিতে বাংলাদেশতানজানিয়ায় ভারী বৃষ্টি-ভূমিধসে নিহত ১৫৫মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস, গরম কমা নিয়ে সংশয়ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
No icon

আজ বিশ্ব পানি দিবস

তিলোত্তমা নগরী ঢাকার প্রায় আড়াই কোটি মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে প্রতিদিনই বাড়ছে পানির চাহিদা। দূষণের কারণে ঢাকার চারপাশের নদী ও জলাশয়ের পানি ব্যবহারের উপযোগিতা না থাকায় চাহিদার জোগান দিতে ভূগর্ভস্থ পানিই যেন হয়ে উঠেছে অন্ধের নড়ি । তথ্য বলছে, প্রায় ৭০ শতাংশ পানি তুলতে হচ্ছে মাটির গভীর থেকে। তবে যে হারে পানি খরচা হয়ে যাচ্ছে তাতে দ্রুত নামছে পানির স্তর। নিয়ম না থাকলেও সিটি করপোরেশন এলাকায় তুমুল উৎসাহে বসছে গভীর নলকূপ। এতে ;চাপ পড়ছে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর, নষ্ট হচ্ছে সুপেয় পানির উৎস।ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা কর্মসূচির আওতায় নেওয়া উদ্যোগে বলা হয়েছিল ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভূউপরিস্থ পানির (সারফেস ওয়াটার) উৎপাদন বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ করা হবে। আর ভূগর্ভস্থ পানির উৎপাদন ৩০ শতাংশে নামানো হবে। এ জন্য হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিলেও ফল হয়েছে উল্টো। এখন প্রতিদিন ঢাকা ওয়াসা যে ২৯০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে এর ৭০ শতাংশই আসছে গভীর নলকূপ থেকে। ৩০ শতাংশ পানি মিলছে ভূউপরিস্থ উৎস থেকে।এমন পটভূমিতে নানা আয়োজনে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানি দিবস। প্রতি বছরের ২২ মার্চ অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হয়।

অনিয়ন্ত্রিত গভীর নলকূপ

২০১০-১১ অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসার প্রতিদিন পানি উৎপাদনের গড় সক্ষমতা ছিল প্রায় ২০০ কোটি লিটার। এর মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি লিটার (৫০ শতাংশ) পানি আসত গভীর নলকূপ থেকে। বাকি ৫০ শতাংশ পানি মিলত ভূউপরিস্থ নদীর পানি শোধন করে। তবে ভূগর্ভস্থ পানি তুলতে থাকায় পরিবেশ বিপর্যয়, ভূমিধস ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ার শঙ্কায় ঢাকা ওয়াসা পর্যায়ক্রমে গভীর নলকূপের সংখ্যা কমিয়ে ভূউপরিস্থ পানির ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর বার্তা দিয়েছিল। তবে ঢাকা ওয়াসার সেই আশা গুড়েবালি হয়েছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী এলাকার ভূগর্ভস্থ পানির উৎস প্রায় শেষের পথে। প্রতিবছরই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২ থেকে ৩ মিটার নেমে যাচ্ছে। যে কারণে অনেক গভীর নলকূপে পানি আসছে না। অনেক নলকূপের কমছে উৎপাদন ক্ষমতা। এতে করে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে ঢাকা মহানগরী।জানা গেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসার গভীর নলকূপ ছিল ৫৮৬টি। বছর বছর বেড়ে এখন তা হয়েছে ১ হাজার ৮১টি। এর মধ্যে ৯৫৬টি নলকূপ দিয়ে নিয়মিত ভূগর্ভস্থ থেকে পানি তোলা হচ্ছে। ২০টি নলকূপ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত বুধবারের হিসাবে দেখা গেছে, ওই দিন ঢাকা ওয়াসা ২৮৯ কোটি ৮৫ লাখ লিটার পানি উৎপাদন করে। এর মধ্যে ২০৫ কোটি লিটার পানি পাওয়া যায় গভীর নলকূপ থেকে। এ ছাড়া চারটি পানি শোধনাগার থেকে এসেছে ৮৪ কোটি ৭৬ লাখ লিটার। ফলে উৎপাদিত পানির প্রায় ৭০ শতাংশই আসছে ভূগর্ভস্থ থেকে।এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপন করা অন্তত আরও ২ হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে রাজধানীতে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চলা এ নলকূপগুলোর মাধ্যমেও বিপুল পরিমাণ পানি প্রতিদিন তোলা হচ্ছে। এর বাইরে আরও হাজার খানেক অননুমোদিত গভীর নলকূপ রয়েছে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায়।

বিশ্ব পানি দিবসে নানা আয়োজন

বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দিবসটিতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আলোচনা সভা, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে পানির ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য গতকাল দেশের কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন ও শোভাযাত্রা করা হয়।