৩ দিন ভারত ভ্রমণে যেতে পারবেন না বাংলাদেশিরাসৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যুঢাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিদেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
No icon

২০২৩ সালে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট মুক্ত হবে বাংলাদেশ

ট্রান্সফ্যাট (টিএফএ) রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে ভালো কোলেস্টেরল কমায়। ফলে হৃদযন্ত্রে মাত্রাতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরলের কারণে হার্ট অ্যাটাক, মস্তিষ্কের স্ট্রোক, রক্তনালীর অসুখ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণ। বিশ্বের ১৫টি দেশে ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু দুই-তৃতীয়াংশ। তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম। এখানে প্রতি বছর হৃদরোগে যত মানুষ মারা যায়, তার চার দশমিক ৪১ শতাংশের জন্য দায়ী খাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি। গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।এমন পরিস্থিতিতেও সুখবর হচ্ছে এ মৃত্যু রোধে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি প্রণয়ন করা হয়েছে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১। এই প্রবিধানমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত হওয়ায় ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরে সব তেল, ফ্যাট ও খাদ্যপণ্যে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা মোট ফ্যাটের ২ শতাংশে মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। নির্দিষ্ট ওই সময়ের পর মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট ব্যবহার হবে দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ এই বিধান না মানলে তাকে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড বা ১২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে আইন অনুযায়ী।প্রবিধানটি করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। কমিটির সভাপতি ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরে আর মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট ব্যবহারের সুযোগ থাকছে না। গত ৬ ডিসেম্বর আমরা প্রবিধিমালা বাস্তবায়ন করতে খাদ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মিটিং করেছি। এখন হাতে থাকা এক বছরের মধ্যে আমরা একটা রোডম্যাপ প্রণয়ন করবো। যাতে শিল্পোদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে পারি। নিজস্ব ল্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোসহ খাবার তৈরির সব স্তরেও সেটা বাস্তবায়ন এবং জনগণকে সে বিষয়ে সচেতন করতে পারি।

আমরা এর মধ্যে সব স্তরের খাদ্য প্রস্তুতকারীদের চিঠি ও নির্দেশনা দেবো। এ বিধান মানতে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেওয়া হবে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো দ্বিমত ছিল না। খাদ্য ব্যবসায়ীসহ সব পক্ষের মতামতের পরই এটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তারা শুধু সময় চেয়েছিল, এজন্য এক বছর দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট রুখতে আমরা সফল হবো।বেশিরভাগ ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয় শিল্পপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে। প্যাকেটজাত, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও বেকারি পণ্যে বিদ্যমান ট্রান্সফ্যাট হলো এক ধরনের স্নেহজাতীয় খাদ্য উপাদান। অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণে খারাপ কোলেস্টেরল রক্তবাহী ধমনিতে জমা হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। এতে হৃদরোগসহ বেশকিছু রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আর বাংলাদেশে খাবারে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল (পিএইচও)। এই উপাদান ডালডা ও বনস্পতি নামে পরিচিত। শিল্পোৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে রাস্তার পাশের দোকানে তৈরি খাবারেও এ ডালডা ব্যবহৃত হয়।ট্যান্সফ্যাট কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ভিজ্জ তেল তৈরির সময় তাতে হাইড্রোজেন যুক্ত হয়। এই আংশিক হাইড্রোজেনযুক্ত উদ্ভিজ্জ তেল, যা স্বাভাবিক কম তাপমাত্রায় শক্ত হয়ে যায়, সেটিই হলো ট্রান্সফ্যাট। আবার ভেজিটেবল অয়েল বা উদ্ভিজ্জ তেল (পাম, সয়াবিন) যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পারশিয়ালি হাইড্রোজেনশন করা হলে তরল অবস্থা থেকে মাখনের মতো অর্ধকঠিন মারজারিন বা বনস্পতি ঘি উৎপন্ন হয়, যা বাজারে ডালডা নামে পরিচিত। এটা ট্রান্সফ্যাটের সবচেয়ে বড় উৎস।