
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে গতকাল ছিল উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভা। সেখানে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভায় আসন্ন নির্বাচনে পুলিশের পাশাপাশি আনসার, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীকে কীভাবে আরও বেশি সংযুক্ত করা যায়; সরকার সেটি আন্তরিকভাবে বিবেচনা করছে বলে জানানো হয়। তবে র;্যাবকে নির্বাচনী দায়িত্বের বাইরে রাখা হতে পারে।নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ইসিকে আনুষ্ঠানিক পত্র দেওয়ার মাধ্যমে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশন দিনক্ষণ ঠিক করবে। একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে ইসি তাদের সব কার্যক্রম পরিচালনা করবে; এ নিয়ে গতকালের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।দ্বিতীয়বারের মতো উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিতে গতকাল সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে সচিবালয়ে যান প্রধান উপদেষ্টা। জাতীয় প্রেসক্লাবের পাশে ৫ নম্বর গেট দিয়ে তিনি সচিবালয়ে ঢোকেন। তার আগমন ঘিরে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। একমাত্র এক নম্বর গেট দিয়ে গাড়ি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে বিজিবি, র?্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী কড়া নজরদারিতে ছিল। স্টিকারবিহীন কোনো যানবাহন এবং পরিচয়পত্রবিহীন কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সংবাদকর্মীদেরও বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সকাল সাড়ে ১০টায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন নির্মিত এক নম্বর ভবনের ৫ তলায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকটি হয়। বৈঠক শেষে দুপুর সোয়া ২টায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া। এর মধ্যে সংস্কার ও বিচার অন্তর্ভুক্ত। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। সরকারের চেষ্টা থাকবে সবচেয়ে ভালো একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে। প্রশাসনও প্রস্তুতি নিচ্ছে।আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন- এমন ঘোষণার পর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং জামায়াতে ইসলামীর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দাবির বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে এলে কারও কোনো অভিযোগ থাকবে না।অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে আজ (৮ আগস্ট)। এ সময়ে প্রশাসন ভেঙে পড়ছে- এমন বক্তব্যে একমত নন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালানোর সময় দেশে খাদ্যের মজুদ ছিল ১৮ লাখ টন। এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ টনে। প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাংক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। রিজার্ভ বাড়ছে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, অতীতের তুলনায় পরিস্থিতি ভালো। একটা-দুইটা খুন হলেই বলা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। তিনি জানান, প্রতি মাসে অপরাধ ও খুনের চিত্র তুলে ধরতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানোর যুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরনের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো হয়।