মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাসহ ১৫টি অগ্রাধিকার চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নই এখন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে এ ব্যাপারে কয়েকটি মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, শূন্যপদে জনবল নিয়োগসহ দুর্নীতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলোয় মন্ত্রণালয়গুলো কতটা সক্ষমতা দেখাতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।সরকার গঠনের পর ১৫ জানুয়ারি প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার সম্পর্কে ১৫টি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রী ও সচিবদের বলে দেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো যেন সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে। তবে মাঠ পর্যায়ে এখন এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নানা চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। ফলে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তাগিদপত্রও পাঠানো হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো হচ্ছে : সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করে মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ; নির্বাচনি ইশতেহারে বর্ণিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ; কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্যপণ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণে অগ্রাধিকার প্রদান; স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চারটি স্তম্ভ-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট জনগণ নিশ্চিত করতে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের করণীয় চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়ন; নতুন প্রকল্প গ্রহণে প্রকল্পের উপকারিতা/দেশের কল্যাণকে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। বিদেশি ঋণ গ্রহণের সময় যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। এ ছাড়া চলমান প্রকল্পের যেগুলোর কাজ শেষ পর্যায়ে সেগুলো প্রয়োজনীয় অর্থ দিয়ে নির্ধারিত সময়ে শেষ করা; সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা; সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকৃত উপকারভোগীর কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করা; সরকারের শূন্যপদে দ্রুত জনবল নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ; নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখা; রপ্তানি বহুমুখীকরণ, নতুন বাজার অনুসন্ধান ও প্রবেশে সহায়তা করা; গার্মেন্ট খাতের মতো চামড়াজাত পণ্য পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য বিষয়ক শিল্প বিকাশে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ; শিক্ষাকে কর্মমুখী করার লক্ষ্যে আইসিটি শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব প্রদান; যুবসমাজকে খেলাধুলা এবং শিল্পসংস্কৃতি চর্চায় উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে তাদের মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে বিরত রাখা এবং অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ।