গ্যাস সংকটে শিল্প খাতে বিপর্যয়গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ৮৫৮দুর্ঘটনায় বাসে আগুন, পুড়ে নিহত ৩৮দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের পক্ষে বিএনপির শরিকরাসাগরে নিম্নচাপ, সমুদ্রবন্দরে সতর্ক সংকেত
No icon

থমকে আছে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে ১৩ দিন ধরে আন্দোলন করছেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষার্থীদের সাধারণ প্রশাসনিক সেবা কার্যক্রমও বন্ধ। ওদিকে শিক্ষক আন্দোলনের তিন দিন পর শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন। শিক্ষাবর্ষের এই সময়ে বিভিন্ন বিভাগে নতুন সেশনে ভর্তি, নতুনদের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয় জুলাইয়ে। কিন্তু প্রাত্যহিক ক্লাসের সঙ্গে এ সবই বন্ধ রয়েছে। অবশ্য সরকারদলীয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষক আন্দোলন প্রশমিত করার চেষ্টা হলেও শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কঠোর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে রাস্তায় আন্দোলন পরিহার করে ক্লাসে ফেরার তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তবে শিক্ষার্থীরা কোটার আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন গতকাল শনিবার।

প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এ ঘোষণার পর থেকে এটি প্রত্যাহারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বর্তমানে ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম রয়েছে, কর্মবিরতি চলছে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এক নেতা জানান, এই আন্দোলনটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পুরোপুরি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। আবার মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি নেই। ফলে সেগুলোতে সরাসরি কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না। তবে দাবির প্রতি সবার সমর্থন আছে।জানা গেছে, এই কর্মসূচির কারণে তালা ঝুলছে শ্রেণিকক্ষ ও অফিসে। ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কমবেশি একই চিত্র রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী তাসমিয়া মুনহা গতকাল আমাদের সময়কে জানান, গত মঙ্গলবার দুজন সহপাঠীসহ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন স্নাতকোত্তরের সনদ তোলার জন্য। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে তারা সনদ না নিয়েই ফিরে গেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুপ্তা ইসলাম জানান, সাময়িক সনদ তুলতে ক্যাম্পাসে গিয়ে ফেরত এসেছেন। তার সাময়িক সনদ বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে প্রয়োজন।

ভর্তি অসম্পন্ন : ২৪টি (গুচ্ছভুক্ত) সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। দ্বিতীয় ধাপে ভর্তির প্রক্রিয়া চলাকালে শিক্ষকদের আন্দোলনে স্থগিত রয়েছে এ কার্যক্রম। প্রকৌশল গুচ্ছভুক্ত তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও চতুর্থ ধাপের ভর্তির কার্যক্রম আটকে আছে। চট্টগ্রাম, খুলনা এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুরা অনিশ্চতায় দিন গুনছেন। অন্যদিকে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভবই হয়নি।২৪ বিশ^বিদ্যালয়ের গুচ্ছভুক্ত ভর্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। এই বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন গতকাল বলেন, আন্দোলন চলছে, শিক্ষক হিসেবে তাতে আমাদের সমর্থন আছে। তবে প্রশাসনিক দিক দিয়ে আমরা সক্রিয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কাদের দিয়ে কাজ করাব?

তবে কর্মবিরতি ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের আশঙ্কা নেই বলে তারা জানিয়েছেন। দাবি আদায় হলে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব ড. মো. আবদুর রহিম। তিনি বলেন, আমরা ইচ্ছা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি চাই না।শুরু হয়নি নবীনদের ক্লাস : ভর্তি শেষে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটে ক্লাস শুরুর কথা ছিল। তবে নবাগতদের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরুর আগেই সেশনজটের আশঙ্কা। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি শেষ হলেও স্থগিত রয়েছে আবাসিক হলে ভর্তিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম।