১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাঁপছে নীলফামারী খালেদা জিয়াকে ওমরাহ’র আমন্ত্রণ জানিয়েছে সৌদি যুবরাজতিতাসে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ছেসকালে কুয়াশা দুপুরে কড়া রোদ, ক্ষতির মুখে চাষিআদানি ইস্যুতে পার্লামেন্টে তুমুল হট্টগোল
No icon

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে তৈরি পোশাক খাত

বৈশি^ক পরিস্থিতিতে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক মন্দার জের এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা। নানা সংকটে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান এই খাতটি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে প্রবৃদ্ধিও কমেছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, যুদ্ধের কারণে ক্রেতারা অর্ডার দিতে ভয় পাচ্ছেন। আবার পণ্যের দর কষাকষি করতে গেলে ক্রেতারা চলে যাচ্ছেন অন্য দেশে। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানির বড় বাজার ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানি কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে। এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে অর্জন হয়েছে ৪০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া গত এপ্রিল মাসে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে। এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে অর্জন হয়েছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার।তবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইপিবি অনেক পজেটিভ হিসাব দিচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি এতটা ভালো না। তারা জানান, মন্দার কারণে বিশ^বাজারে পোশাকের চাহিদা কমেছে। পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও বায়াররাও অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন। তবে ক্ষতি কমাতে অনেক কারখানা লোকসান দিয়ে কম দামে অর্ডার নিচ্ছেন।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল এই দশ মাসে ৪০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর আগের অর্থবছরের এই সময়ে জুলাই-এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গেল এপ্রিল মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আগের বছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।অর্থাৎ এপ্রিল মাসে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।তৈরি পোশাক শিল্প একটি সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আরেকটি সমস্যার মধ্যে পড়ছে বলে মনে করেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, বিশ^বাজারে কাঁচামালের দাম বাড়ায় পণ্য উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে না। বেশি দরকষাকষি করলে তারা পাশের দেশে চলে যাচ্ছে। অনেক কারখানা মালিক লোকসানের ঘানি কমাতে কম দামে অর্ডার নিয়ে কাজ করছেন। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ক্রেতাদের বড় সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বর্তমান সংকটকালে ক্রেতারা দ্রুত পণ্য চায়, যা আমরা দিতে পারি না। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ কারণে অনেক অর্ডার বাতিল করতে হচ্ছে। এসব অর্ডার চলে যাচ্ছে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায়। পণ্য পাঠাতে বিলম্বের জন্য তিনি দেশে গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো সমস্যার পাশাপাশি কাস্টমসের হয়রানিকে দায়ী করেন।তবে এই মতের সঙ্গে একমত নন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হয়েছে। অবকাঠামোর অনেক উন্নতি হয়েছে। চলমান বৈশি^ক অস্থিতিশীলতা কাটলে ব্যাপক অর্ডার পাওয়া যাবে এবং কাজও করা যাবে। চলমান সংকট না কাটলে রপ্তানি আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে।