উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপিডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ফরিদপুরে বাস-পিকআপভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১১গরমে বাড়ছে ডায়রিয়া, জ্বরবিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস
No icon

টাকা-রুপিতে লেনদেনের সম্ভাব্যতা যাচাই হচ্ছে

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেনের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে ভ্রমণসহ বিভিন্ন খরচ কার্ডের মাধ্যমে টাকা-রুপিতে করার কথা ভাবা হচ্ছে। এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য শিগগির রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী এবং বেসরকারি খাতের যেসব ব্যাংক কার্ড ব্যবসায় এগিয়ে আছে, তাদের নিয়ে একটি বৈঠক হবে। সেখানে কার্ড চালুর পদ্ধতি, লেনদেনের ঝুঁকি এবং লাভ-ক্ষতির বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।বৈশ্বিকভাবে নিজেদের মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে বেশ আগ থেকে চেষ্টা করে আসছে ভারত, চীন, রাশিয়াসহ কয়েকটি বড় দেশ। আর এ জন্য ওই দেশগুলো পার্শ্ববর্তী দেশে নিজেদের মুদ্রা প্রচলনের বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে। তবে বৈশ্বিকভাবে ডলারের বাইরে অন্য মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা কম থাকায় ব্যবসায়ীদের তাতে সাড়া নেই। ২০১৮ সালে চীনের মুদ্রা ইউয়ানে ক্লিয়ারিং অ্যাকাউন্টের অনুমোদনের পর গত সেপ্টেম্বরে আবার এলসি খোলারও সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এতেও সাড়া নেই। আর ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের পর থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুই দেশের বাণিজ্যে নিজস্ব মুদ্রা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে আজও তা কার্যকর হয়নি।

বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা-রুপির লেনদেনের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে গত ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত জি-২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরদের বৈঠকের পর। ওই সময় বাংলাদেশ ও ভারতের গভর্নরের মধ্যকার বৈঠকে ডলারের পরিবর্তে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন নিয়ে কথা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করে এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এর পর বাংলাদেশ ব্যাংক নতুনভাবে টাকা-রুপিতে লেনদেনের সম্ভাব্যতা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, টাকা-রুপিতে লেনদেনের সম্ভাব্য বিভিন্ন দিক নিয়ে এখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, টাকা-রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তি অনেক জটিল ও সময় সাপেক্ষ। চিকিৎসা, ভ্রমণ, শিক্ষা, সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিবছর প্রচুর বাংলাদেশি ভারতে যান। ভারত থেকেও অনেকে বাংলাদেশে আসেন। প্রাথমিকভাবে এই লেনদেন নিজস্ব মুদ্রায় করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

বিদ্যমান নিয়মে ব্যাংকগুলো শুধু ডলার ও ইউরোতে আন্তর্জাতিক কার্ড ইস্যু করে। ভিসা, মাস্টারকার্ডের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেই এসব লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। অবশ্য আন্তর্জাতিক এসব কার্ড নিয়ে ভারতে গিয়ে চাইলে রুপিতে পরিশোধ করা যায়। এটিএম বুথ থেকেও তোলা যায় নগদ রুপি। তবে এ জন্য টাকা থেকে ডলার, সেখান থেকে রুপিতে রূপান্তরের ফলে বিনিময়জনিত লোকসান হয়। নতুনভাবে সরাসরি রুপিতে কার্ড ইস্যুর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। তবে ভিসা, মাস্টারকার্ড প্ল্যাটফর্মের বাইরে সরাসরি টাকা-রুপিতে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে হলে এক দেশ আরেক দেশের লেনদেন নিষ্পত্তির নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে এক্সেস দিতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে এরকম ব্যবস্থায় রাজি হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।