নতুন নির্বাচন কমিশনের শপথ রোববারপ্রস্তুত হচ্ছে নির্বাচনী মাঠবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণাগাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজারকুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
No icon

ডেল্টা লাইফে ৩ হাজার কোটি টাকার ‘অনিয়ম’

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে বিশেষ অডিটে উঠে এসেছে। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে কোম্পানিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার পর নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস দিয়ে এই অডিট করা হয়েছে।তবে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের অডিট রিপোর্টের তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন ডেল্টা লাইফের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদিবা রহমান। তার অভিযোগ, ডেল্টা লাইফে প্রশাসক বসানোর উদ্দেশ্য ছিল আমাদের বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আসা। এখন আইডিআরএকে ডিফেন্স করার জন্য প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।দেশের জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সব থেকে বড় প্রতিষ্ঠান ডেল্টা লাইফ। তবে দীর্ঘদিন ধরেই কোম্পানিটির মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সম্প্রতি বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও ডেল্টা লাইফের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিন ডজন মামলার ঘটনাও ঘটেছে। ডেল্টা লাইফের মালিকদের একটি অংশের সঙ্গে আইডিআরএর দ্বন্দ্বের জেরে প্রায় এক বছর ধরে প্রশাসক দিয়ে চলছে এই জীবন বিমা কোম্পানিটি।আইডিআরএ এবং ডেল্টা লাইফের মধ্যকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নেয় ২০২০ সালে। ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর সিইও হিসেবে পুনর্নিয়োগের আবেদন করেন আদিবা রহমান। কিন্তু ১৬ নভেম্বর তার আবেদন বাতিল করে আইডিআরএ।

এরপর একই বছরের ৮ ডিসেম্বর ডেল্টা লাইফের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করা হয় আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেন ৫০ লাখ টাকা ঘুস দাবি করেছেন। দুদকে অভিযোগ করার পর ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন ;করেও একই অভিযোগ করা হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডেল্টা লাইফের সাবেক সিইও আদিবা রহমান।ডেল্টা লাইফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করার এক সপ্তাহের মাথায় ১১ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটিতে প্রশাসক নিয়োগ প্রশাসক নিয়োগ দেয় আইডিআরএ। আইডিআরএর সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে প্রথম প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। চার মাস না যেতেই গত বছরের জুনে তার নিয়োগ বাতিল করে নতুন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয় সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল ইসলামকে।তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রশাসক পদ থেকে পদত্যাগ করেন মো. রফিকুল ইসলাম। এরপর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে জীবন বিমা কোম্পানিটিতে তৃতীয় প্রশাসক নিয়োগ তৃতীয় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এ দফায় প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান আইডিআরএর আরেক সাবেক সদস্য মো. কুদ্দুস খান।ডেল্টা লাইফে এ প্রশাসক নিয়োগ নিয়েও আদালতে মামলা চলমান। এর মধ্যেই সম্প্রতি ডেল্টা লাইফের বিষয়ে আইডিআরএর কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেন প্রশাসক মো. কুদ্দুস খান। এ প্রতিবেদনে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে ডেল্টা লাইফে বিভিন্ন অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভিন্ন উপায়ে ডেল্টা লাইফে দুই হাজার ৯১৭ কোটি ৮২ লাখ ৭১ হাজার টাকা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইডিআরএ। এর মধ্যে ম্যানুপুলেশনের মাধ্যমে দাবির প্রভিশন কম দেখিয়ে অতিরিক্ত লভ্যাংশ নেওয়ার মাধ্যমে কোম্পানির দুই হাজার ৫১৩ কোটি ৮৪ হাজার টাকা ক্ষতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।