
ঈদযাত্রার শুরুতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখী মানুষ। রাজধানীতে যানজট থাকায় টার্মিনালগুলোতে বাস পৌঁছতে অতিরিক্ত ২-৩ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কের পাশে পশুর হাট বসানো, বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চলাচল, সড়ক ভাঙাচোরা হওয়াসহ নানা কারণে সড়ক-মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল আশুলিয়া সড়কে নবীনগর-চন্দ্রা এলাকায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে পাঁচটি আন্তনগর ট্রেন বিলম্বে ছেড়েছে। এতে এবার ঈদযাত্রার শুরু হয়েছে ভোগান্তি দিয়েই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্তজেলা টার্মিনালে ঢুকতে এবং বের হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। প্রতিটি টার্মিনালের সামনের সড়কে যানজট রয়েছে। সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে বের হতে এবং ঢুকতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। এর মধ্যে জনপথ মোড়, যাত্রাবাড়ী মোড়, শনির আখড়ায় দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়। এখানে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায় বলে জানান পরিবহন চালকরা। একই সঙ্গে মহাখালী বাস টার্মিনালে ঢুকতে এবং বের হতে এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত, বনানী, মহাখালীতে যানজটে পড়তে হচ্ছে। একই অবস্থা গাবতলী টার্মিনালেও। টার্মিনালে ঢুকতে এবং বের হতে আমিনবাজার পর্যন্ত যানজটে পড়তে হচ্ছে বলে জানান পরিবহন চালকরা। এ সড়কগুলোতে যত্রতত্র গাড়ি থামানো বন্ধ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভালো করতে পারলে যানজট অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঈদযাত্রার শুরুতেই সাভারের আশুলিয়ার মহাসড়কে প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ চলমান থাকায় সৃষ্ট গর্তের কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশ জানায়, গত তিন-চার দিনের টানা বৃষ্টি ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যে নির্মাণকাজ চলছে, এজন্য রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত ছিল।
ব্যাহত বৃষ্টির কারণে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য গাড়িগুলো স্পিডে চলতে পারছে না। তেই যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. রিজওয়ান বলেন, সড়ক বিভাগ গর্তগুলো মেরামত করছে। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। গর্তগুলো ভরাট হয়ে গেলে সব যানবাহন ঠিক গতিতে চলতে পারবে। এ যানজট আর থাকবে না। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেন পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ট্রেন চলাচলের দ্বিতীয় দিনে গতকাল ঢাকা থেকে পাঁচটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বিলম্বে ছেড়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও রংপুরগামী আন্তনগর রংপুর এক্সপ্রেস ২০ মিনিট বিলম্বে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে যাত্রা শুরু করে। একই সঙ্গে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস, সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনও বিলম্বে ছেড়েছে। জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী রাকিব হাসান বলেন, গতকাল সব ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে বলে দেখেছি। কিন্তু আজ আমি ট্রেনে উঠে ৩০ মিনিট ধরে বসে আছি। কী জন্য দেরি হচ্ছে সেটা কেউ বলতে পারছে না। ট্রেনে বিদ্যুৎও নেই, গরমে খুব বিরক্ত লাগছে। এ বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ব্যবস্থাপক মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে বেশির ভাগ ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। দু-একটি ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে। এ ছাড়া জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসকে যে ইঞ্জিন টেনে নেওয়ার কথা ছিল সেটিতে ত্রুটি হয়েছে। ত্রুটি মেরামত করা হলে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে।