
বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে চলতি শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেও এখনও প্রায় ২৫ শতাংশ সিট খালি রয়েছে। গত তিন বছর ধরেই এই খাতের অর্ধেক আসন ফাঁকা থাকছে।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, স্বাস্থ্য খাতে পদোন্নতিসহ নানা অনিয়ম, হয়রানি ও বৈধ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখন আর চিকিৎসক হওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বিষয়টি চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অশনিসংকেত বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।বিগত সরকারের আমলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরসহ এক শ্রেণির কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধার লোভে প্রাইভেট মেডিকেলে শিক্ষা ব্যবস্থায় অটোমেশন পদ্ধতি চালু করেন। এতে করে মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না। ফলে অনেকেই বিদেশে চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণের পথ বেছে নিচ্ছেন।অভিভাবকরাও বলছেন, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া কিংবা সিলেটের মতো অঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ী স্থানীয় কলেজ বেছে নেয়া যেত। কিন্তু অটোমেশনের কারণে ঢাকাসহ অন্য বিভাগে ভর্তির ফলে দ্বিগুণ খরচে পড়তে হচ্ছে, যা অনেক পরিবারের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, অটোমেশন পদ্ধতি একক কোনো সমস্যা নয়। চিকিৎসক হতে দীর্ঘ সময়ের পড়াশোনা, পরিশ্রম এবং চাকরির নিশ্চয়তা না থাকাও বড় কারণ। অন্যান্য ক্যাডারে চাকরি পাওয়ার পর যেখানে দ্রুত পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা মেলে, চিকিৎসা পেশায় সেসব সুবিধা অনেক ক্ষেত্রেই সীমিত।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (মেডিকেল শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন মাতাব্বর বলেন, ভর্তি নীতিমালা পরিবর্তনের এখতিয়ার সরকারের। আমরা শুধু সেই নীতিমালা বাস্তবায়ন করি।অন্যদিকে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিগত সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল অটোমেশনের আড়ালে বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা। দেশের চিকিৎসা শিক্ষার স্বার্থে এই ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (মেডিক্যাল শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সুমন নাজমুল জানান, বিএমডিসি, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে নতুন করে মানোন্নয়নের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এতে অনিয়মের সুযোগ থাকবে না এবং শিক্ষার মানও বাড়বে।দেশে বর্তমানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৬৭টি এবং সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ৩৪টি।