যেমন থাকবে ছুটির দিনের আবহাওয়াদ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা পাবেন প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকরোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠক
No icon

পানি-গ্যাস সংকটে নাকাল চট্টগ্রাম

দুর্বিষহ এক রমজান যাচ্ছে আমাদের। গোসলের পানি দূরে থাক, নামাজের সময় অজুর পানিও পাচ্ছি না। গত চার দিন ধরে ওয়াসার লাইন দিয়ে এক ফোঁটা পানিও আসেনি। শুধু পানি না, ইফতারি ও সাহ্রি তৈরির সময় চুলায় গ্যাসও থাকছে না– চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার কাতালগঞ্জ এলাকার নুরজাহান বেগম এভাবেই নিজের দুর্ভোগের কথা বলছিলেন। তবে গত বুধবার যখন তিনি এসব কথা বলছিলেন, চট্টগ্রামের এক-চতুর্থাংশ এলাকায় তখন পানি ও গ্যাসের জন্য চলছিল হাহাকার। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম নগরীতে এই চিত্র অনেকটা নিয়মিত হয়ে পড়েছে।নগরবাসী জানান, কিছু দিন পরপর ওয়াসার ভূগর্ভস্থ লাইনে ফাটল ধরে নগরীর বিভিন্ন অংশে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকলেও এর সমাধান হয় না। টানা কয়েক দিন পানি বন্ধ থাকায় অনেককে গোসল সারতে পাশের এলাকায় যেতে হচ্ছে। আবার বহদ্দারহাট, চকবাজার, মোহরা এলাকার অনেকে গ্যাস না পেয়ে সাহ্রি ও ইফতারি কিনে খাচ্ছেন।এ সংকট সমাধানে বিক্ষুব্ধ জনতার কেউ ছুটে যাচ্ছেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে (কেজিডিসিএল)। কেউ ঘেরাও করছেন ওয়াসা ভবন। তবু কাটছে না গ্যাস ও পানির সংকট। নতুন সমস্যায় ওয়াসা

ওয়াসার ভূগর্ভস্থ লাইনে ফাটল অথবা উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে কাটা পড়ার বিষয়টি বেশ ঘন ঘনই হচ্ছে। দক্ষ জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় দ্রুত এর সমাধানও করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। দেখা যাচ্ছে, তিন-চার দিন সময় নিয়ে এক এলাকার লাইন স্বাভাবিক করলে ফাটল দেখা দিচ্ছে অন্য এলাকার আরেকটি লাইনে। গত তিন মাসেই এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে।সর্বশেষ গত ৮ মার্চ রাতে নগরীর সাগরিকা এলাকায় বিদ্যুতের ভূগর্ভস্থ কেবল স্থাপনের সময় ওয়াসার পানি সরবরাহ লাইন কাটা পড়ে। ১১০০ মিলিমিটার ব্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগ্রাবাদ, হালিশহর, সিডিএ, দেওয়ানহাট, কদমতলীসহ আশপাশের কয়েক লাখ বাসিন্দা গত পাঁচ দিন ধরে পানি পাচ্ছেন না। গত বুধবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে লাইন চালু করা হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এসব এলাকার মানুষ পানি পাননি।এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের অনন্যা আবাসিকসংলগ্ন এলাকায় কালভার্ট নির্মাণের কাজের সময় ওয়াসার ৪৮ ইঞ্চি ব্যাসের সরবরাহ পাইপলাইন কাটা পড়ে। ওই লাইন দিয়ে রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ থেকে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার পানি নগরীতে সরবরাহ করা হতো। এতে নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ, জামালখান, চকবাজারসহ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ওয়াসা তখন জানায়, পাইপলাইনটি ছিল মাটির প্রায় ৫ ফুট নিচে ঢালাইয়ের ভেতর। এর পরও প্রায় ৮-১০ ইঞ্চি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাইপলাইনের অবস্থান ও নকশা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কুয়াইশ এলাকায় নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়ে পাইপের অবস্থান দেখিয়েও দেন। তারপরও পাইলিংয়ের সময় পাইপটিতে আঘাত করা হয়। পরে মাটি খুঁড়ে মেরামত করতে হয়েছে।এদিকে তীব্র পানি সংকট সমাধানের দাবিতে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ওয়াসা অফিস ঘেরাও করেন ভুক্তভোগীরা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, রমজানের মধ্যেও ঠিকমতো পানি পাচ্ছি না। ধর্ম-কর্মও ঠিকমতো করা যাচ্ছে না। একেক দিন একেক সমস্যার কারণে বন্ধ থাকছে পানি সরবরাহ। কেন বন্ধ রাখা হচ্ছে সেটার কোনো জবাবও দেয় না কেউই।পরে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে ওয়াসার পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত করছে অন্য সংস্থা। এ জন্য লাইন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছি।