বৃষ্টি কবে কমবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর১৫ জুলাইয়ের পর গ্যাস সংকট থাকছে না: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীযুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস আজসরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আপিল শুনানি আজসৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয়ে পতন
No icon

শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি প্রত্যয় চালুর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার দাবিতে গতকাল সোমবার অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে দেশের ৫৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। হচ্ছে না ক্লাস ও পরীক্ষা। গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ও প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাসও বন্ধ রয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শতাধিক শিক্ষার্থীকে গতকাল ফরম পূরণ, ফল পুনর্মূল্যায়ন ও সনদের ট্রান্সক্রিপ্ট তোলার জন্য অপেক্ষা করে ফিরে যেতে দেখা গেছে। তাদের একজন হলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আসলাম হোসেন। গত ৬ জুন তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে সনদ উত্তোলনের আবেদন করেন। ১৫ দিনের মধ্যে এটি পাওয়ার কথা; কিন্তু এখনও পাননি। এর মধ্যে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি শুরু হয়ে গেছে। সমকালকে আসলাম বলেন, বিপদের মধ্যে আছি। আগামী বৃহস্পতিবার আমার চাকরির ভাইভা। প্রত্যয় চালুর বিরোধিতা করে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষকরা।

কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ার কথা জানিয়ে গত রোববার একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। সে অনুযায়ী গতকাল দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি।এ কর্মসূচির কারণে ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে দাপ্তরিক কাজ। ঢাবির মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে জরুরি চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েক শিক্ষার্থী। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় প্রধান প্রবেশপথ ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন হল ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কর্মবিরতি পালন করছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা গতকাল ঢাবি কলাভবনের মূল ফটকের অভ্যন্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।এর আগে রোববার সংবাদ সম্মেলনে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, তাদের দাবি হলো, প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন।

সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করেনি কেউ

কর্মবিরতি শুরুর প্রথম দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া। সমকালকে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। তাঁর কাছে আমাদের ব্যথা, বেদনা এবং তথ্য ও যুক্তি তুলে ধরতে চাই।

বন্ধ গ্রন্থাগারে ইটপাটকেল নিক্ষেপ

সকালে ঢাবি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করতে আসেন অনেক শিক্ষার্থী। গেট বন্ধ পেয়ে তারা অপেক্ষা করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় গ্রন্থাগারের গেট না খোলায় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গেটে ধাক্কাধাক্কি করেন। এতে গ্রন্থাগারের গেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে লাইব্রেরি কেন বন্ধ থাকবে? গ্রন্থাগার বন্ধ থাকলে লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হবে।ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের হোমিওপ্যাথি বিভাগে সেবা না পেয়ে ফিরে আসার অভিযোগ করেন কয়েক শিক্ষার্থী। তবে চক্ষু-দন্তসহ অন্যান্য বিভাগ চালু রয়েছে।হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন খোকা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও মেডিকেল সেবা বন্ধ ছিল না। কেউ এভাবে হাসপাতাল সেবা বন্ধ করে না। বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুজাব আলীর অভিযোগ, কর্মবিরতির কারণে তাঁকে সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন হোমিওপ্যাথি বিভাগের চিকিৎসকরা।