পর্যটকদের সাজেক ভ্রমণে ফের নিষেধাজ্ঞাওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের ১৫ বছরের অপেক্ষা ফুরালপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজ বিএনপির সংলাপবাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে রিট, আজ শুনানিসারা দেশে তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি
No icon

গরমে বাড়ছে ডায়রিয়া, জ্বর

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ। অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। তবে ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক কম থাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রোগী ও তাদের স্বজনকে।কলেরা হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রসহ (আইসিডিডিআর,বি) বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি। চিকিৎসকরা বলছেন, কয়েক দিন ধরে অতিরিক্ত গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। অনিরাপদ পানি ও খাবার গ্রহণের কারণে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে দেখা গেছে, অনেকে এসেছে জ্বর, সর্দি, হাঁচি-কাশি নিয়ে। ঈদের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের কারণে চাপ বেড়েছে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল)। তাদের মধ্যে অধিকাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত।ঢাকা মহানগর ও আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে দিনে ৫০০ জনের বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অন্য সময়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ রোগী ভর্তি হন। সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগী বাড়তে শুরু করে। হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম সমকালকে বলেন, ঢাকার চেয়ে বরিশাল, পটুয়াখালী, জয়পুরহাট, ফরিদপুরে ডায়রিয়া আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। রোগীর সিংহভাগই বয়স্ক। রমজানে রাস্তার পাশে কেনা খাবার খাওয়া এবং অনিরাপদ পানি পান করায় হয়তো ডায়রিয়া বেড়েছে।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে গত রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে লম্বা লাইন। সেখানে নেই বসার ব্যবস্থা। গরমে অসুস্থ শিশুদের নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা। কারও কারও সেবা নিতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। শরীয়তপুরের বাসিন্দা আব্দুর কাদের জানান, তাঁর তিন বছর বয়সী সন্তান জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে দু দিন আগে। তাকে জাজিরা সদর হাসপাতাল নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশু চিকিৎসক ছুটিতে। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। এখানেও সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।চার বছরের ছেলেকে নিয়ে সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালে আসেন পুরান ঢাকার বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২ ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। তাঁর সামনে ৪০ থেকে ৫০ জন দাঁড়িয়ে আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জরুরি বিভাগ চলছে মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে।পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে শিশু হাসপাতালের একজন নার্স বলেন, ঈদের ছুটি থাকায় চিকিৎসক খুবই কম। সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার মতো চিকিৎসক হাসপাতালে নেই। বিশেষ করে, রাতে হাসপাতালের তিন শতাধিক রোগীর ভরসা জরুরি বিভাগের দুই চিকিৎসক। তাই সব চাপ পড়ে নার্সের ওপর। অনেক সময় রোগীর স্বজন বিরক্ত হয়ে নার্সদের বকাঝকা করেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ফারহানা আহমেদ স্বরণী বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যেও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। এর পরও যদি জরুরি কারও আইসিইউ বা শয্যা প্রয়োজন হয়, তাহলেও ব্যবস্থা করতে পারব। তিনি বলেন, এ সময় শিশুদের পাতলা কাপড় পরিধান করানোসহ খাওয়া-দাওয়ায় সতর্ক হতে হবে। শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ঋতু পরিবর্তন ও বায়ুদূষণজনিত কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শিশুদের অনেকে আসছে সর্দি, নাক বন্ধ হওয়া ও হাঁচি-কাশি নিয়ে। কারও কারও তীব্র জ্বর, গলাব্যথা ও কাশি। অন্য সময়ের চেয়ে রোগী বেড়েছে।