বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমার আবারও আশ্বস্ত করেছে বলে দাবি করেছে চীন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই বলেছেন, এ বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে বেইজিং। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে রোহিঙ্গাদের যাতে ফেরত নেওয়া যায় সে লক্ষ্যে মিয়ানমার কাজ করবে বলে জানিয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের আসন্ন নির্বাচনের পর ত্রিপক্ষীয় একটি বৈঠক আয়োজনের বিষয়েও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেন।চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার জানিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা শুরু করবে। তাদের নির্বাচনের পর প্রথমত রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ সময় প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ঢাকায় প্রস্তুতিমূলক সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক দ্রুত শুরু করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ওয়াং ই।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চীনের তৈরি টিকা বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবে বলেও ড. মোমেনকে আশ্বাস করেন ওয়াং ই। সেইসঙ্গে করোনা পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি। করোনা মহামারী মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বাংলাদেশের প্রতি চীনের সাহায্য অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বস্ত করা হয়। মহামারীর কারণে চীনের যেসব প্রকল্প স্থগিত বা ধীরগতি তৈরি হয়েছে সেগুলো পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানান ওয়াং ই।সম্প্রতি পিরোজপুরে চীনের এক নাগরিক হত্যার বিষয়েও কথা বলেন উভয় দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওয়াং ই বলেন, এ হত্যার দ্রুত বিচারের পাশাপাশি চীনের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের ওপর আমাদের সরকার আস্থাশীল। এ সময় ড. মোমেন বলেন, এ ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং দ্রুতবিচার নিশ্চিত করা হবে।মহামারীর কারণে আটকে পড়া চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের ভিসা নবায়নের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান ড. মোমেন। এ বিষয়ে ওয়াং ই জানান, বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের চীনে প্রবেশের বিষয়ে তাদের সরকার এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে বাংলাদেশিদের অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হবে। সেক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান করা হবে ভিসা ও অন্যান্য বিষয়েরও।ফোনালাপে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত আমার দেখা নয়াচীন বইটি চীনা ভাষায় অনুবাদের উদ্যোগের বিষয়ে দেশটির সরকারকে ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন।
