দুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারততাপপ্রবাহের মধ্যেই আজ খুলছে স্কুল-কলেজযুদ্ধবিরতি সম্পর্কে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পেলো হামাসঝুম বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলো সিলেটে
No icon

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

আইন সংশোধন করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যালঘু এই মুসলিম সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন মানবাধিকার কর্মকর্তা জেমস রডিহেভার গতকাল দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আগামী নভেম্বরের নির্বাচনটি রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ। ২০১০ সালের আগে সংখ্যালঘু এই মুসলিম সম্প্রদায় মিয়ানমারের সব নির্বাচনে ভোট দিতে পারত। ২০১৫ সালের পর তাদেরকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। চলতি বছরের জাতীয় নির্বাচনে চারজন রোহিঙ্গা প্রার্থী হওয়ার আবেদন করেছিলেন; কিন্তু তাদের আবেদনগুলো প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এটি রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করার চলমান প্রক্রিয়ার একটি অংশ। জেমস রডিহেভার বলেন, নভেম্বরের নির্বাচনটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ করতে হলে এবং এতে কোনো ধরনের বৈষম্য ছাড়া মিয়ানমারের সব মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার ফেরত দিতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে অর্থবহভাবে এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সে জন্য মিয়ানমার সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সঙ্কটের মূল কারণ নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া এবং সংখ্যালঘু এই মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চালানো নৃশংসতার সাথে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে প্রকৃত প্রতিশ্রুতির দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে হবে।

জাতিসঙ্ঘের এই মানবাধিকার কর্মকর্তা বলেন, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে চালানো নজিরবিহীন নৃশংসতার কারণে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। এর পর থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে রাখাইনে খুব কমই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সাথে সঙ্ঘাতে রাখাইন পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এতে প্রতিকূলতার মধ্যেও মিয়ানমারে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা আরো নাজুক অবস্থায় পড়েছে। ২০১৭ সালে বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের সাথে নিয়ে মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনীর পরিকল্পিত জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর আগে থেকেই নিপীড়নের শিকার হয়ে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে রয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও নানা অজুহাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করেনি। রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতার জন্য মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে।