দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাত থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চযোগে তারা ঢাকায় ঢুকতে শুরু করেন। এর মধ্যে বড় একটি অংশ গতকাল বুধবার রাজধানীর কুড়িল-পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে তৈরি মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। তাদের হাতে ছিল জাতীয় ও দলীয় পতাকা। স্লোগান ও প্ল্যাকার্ডে পুরো সমাবেশস্থল একদিন আগে দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে পূর্ণ হয়ে উঠেছে।বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফেরা তারেক রহমানের জন্য তারা রাজধানীতে ছুটে এসেছেন। ৩০০ ফুটে সকাল থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। আগের দিন রাত থেকে তারা কেউ নিজ উদ্যোগে, আবার কেউ দলীয় উদ্যোগে ঢাকায় প্রবেশ করেন। আশপাশের জেলা থেকে আজ সকালে আরও নেতাকর্মী আসবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে বনানী ও কাকলী হয়ে সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে উঠবেন তারেক রহমান। গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, সংবর্ধনা মঞ্চের নির্মাণকাজ শেষ। ব্যানার, পতাকা ও তোরণে সাজানো হয়েছে সমাবেশস্থল। সকাল থেকে কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা মঞ্চ এলাকা পরিদর্শনে আসছেন।অনেকে সমাবেশের আগের রাত থেকে মাঠে অবস্থানের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। ৩০০ ফুটে মঞ্চের সামনে এবং এর আশপাশে হাজার হাজার নেতাকর্মী সকাল থেকে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের হাতে ছিল দলীয় পতাকা ও ফেস্টুন। এ সময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়। সন্ধ্যার পরপরই ওই এলাকায় নেতাকর্মীদের ভিড় আরও বাড়ে। আশপাশের সড়কে এ সময় যানবাহনের চাপ সামলাতে ট্রাফিক পুলিশকে বেগ পেতে হয়। সময় যত বাড়ছে, সমাবেশস্থলে ভিড় তত বাড়ছে। ৩০০ ফুট থেকে মহাখালী পর্যন্ত দুই পাশের সড়ক বিভাজকে ফেস্টুন ও ব্যানার টানানো হয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ যাতে বক্তব্য শুনতে পান, সে জন্য ৩০০ ফুট থেকে হোটেল র;্যাডিসন পর্যন্ত মাইক লাগানো হয়েছে।
মঞ্চের সামনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও টহল দিতে দেখা যায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর একাধিক টিম গাড়িতে করে দফায় দফায় সমাবেশ এলাকা পরিদর্শন করছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সমন্বিতভাবে কাজ চলছে।কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির চৌদ্দশত ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেন, ৫ আগস্টের পর এটিই হতে যাচ্ছে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ। ২৫ ডিসেম্বর কোনো সাধারণ কর্মসূচি নয়, এটি আনন্দের দিন। তিনি বলেন, ঈদের মতো আনন্দ নিয়েই এখানে এসেছি।বগুড়া থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, নেতাকে স্বাগত জানাতে মানুষ যেভাবে আসছে, তাতে মনে হচ্ছে এটা উৎসব।চট্টগ্রাম থেকে আসা যুবদলের কর্মী ইলিয়াস হোসেন বলেন, এত বছর পরও তারেক রহমানের জন্য মানুষ পথে নেমে আসে, এটাই রাজনীতির শক্তি।ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের স্বাগত জানাতে সাতটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র করা হয়েছে। জায়গাগুলো হলো পোস্তগোলা সেতু, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, বাবুবাজার সেতু, কমলাপুর রেলস্টেশন ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল। এ ছাড়া গাড়ি রাখার জন্য মহাখালী ও ফুলবাড়িয়ায় দুটি জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।