
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক। গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন। ইলন মাস্ক দলটির নাম দিয়েছেন আমেরিকা পার্টি ।কয়েক সপ্তাহ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়ার পর এই ঘোষণা দিলেন টেসলার প্রধান। আজ রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাস্ক বলেন, আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হলো। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত দুই দলীয় রাজনৈতিক কাঠামো রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।তবে এখনো পরিষ্কার নয়, এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত হয়েছে কি না। মাস্ক নিজেও দলের নেতৃত্ব বা কাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।তিনি বলেন, আমরা আসলে একদলীয় শাসনের মধ্যেই বাস করছি, যেখানে অপচয় আর দুর্নীতির মধ্য দিয়ে দেশকে দেউলিয়া করে দেওয়া হচ্ছে। আজ আমেরিকা পার্টি গঠিত হলো, আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে।মাস্কের এই ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।বিবিসি বলছে, মূলত ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি থেকেই দল গঠনের চিন্তা করেন মাস্ক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে বেরিয়ে আসার পর তার বাজেট পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেন এই ধনকুবের।
.এবং এরপরই প্রথমবার নতুন দল গঠনের ইঙ্গিত দেন মাস্ক।এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল দরকার কি না- এমন একটি জরিপ চালান মাস্ক। এক্সে চালানো ওই জরিপে প্রায় ১২ লাখ ভোট পড়ে, যার দুই-তৃতীয়াংশই নতুন দল চেয়েছে বলে জানান তিনি।গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বহুল আলোচিত বিগ বিউটিফুল বিল বা করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিলকে আইনে পরিণত করেন। এই বিলের কড়া সমালোচনা করেছেন মাস্ক। তিনি বলেছেন ;বিলটি যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।এর আগে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে বড় অঙ্কের অর্থ দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। তিনি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে তার সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেছিলেন। কিন্তু নতুন ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের মধ্য দিয়ে এ বিরোধ আরও তীব্র হলো।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মাস্কের নতুন দলের প্রভাব কেমন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে রিপাবলিকান দল আশঙ্কা করছে, এটি ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে দলটির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে। তবে মাস্ক যতই সম্পদশালী হোন না কেন, রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাটদের দুই দলীয় আধিপত্য ভাঙা সহজ কাজ নয়। দল দুটি গত ১৬০ বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে।