
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত তৈরি পোশাক কারখানার ৯৯ শতাংশের বেশি ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করেছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রশাসক ও ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৯৯.৫৩ শতাংশ কারখানা শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করেছে এবং প্রায় ৯৫ শতাংশ কারখানা ঈদ বোনাস দিয়েছে।বিজিএমইএ জানিয়েছে, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত কারখানাগুলো বেতন-বোনাস পরিশোধ করবে। কয়েকটি কারখানায় সমস্যা দেখা দিলেও শ্রমিকদের স্বার্থ বিবেচনায় আগাম ব্যবস্থা নিয়ে তা সমাধান করা হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংক ঈদের আগে শুক্র ও শনিবার শিল্প এলাকায় ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে কোনো সমস্যা না হয়।বর্তমানে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত সচল কারখানার সংখ্যা ২,১০৭টি, যার মধ্যে ঢাকায় ১,৭৬৯টি এবং চট্টগ্রামে ৩৩৮টি। এসব কারখানায় ফেব্রুয়ারির বেতন, মার্চের বেতনের একাংশ ও ঈদ বোনাস পরিশোধ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিজিএমইএ কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১,৯৯৭টি কারখানা (৯৪.৭৮%) ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে এবং ২,০৯৭টি কারখানা (৯৯.৫৩%) ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দিয়েছে। এসব কারখানার কোনো বকেয়া বেতন নেই এবং অধিকাংশ কারখানায় ২৬ মার্চ থেকে ছুটি শুরু হয়েছে।বৃহস্পতিবার আরও ৩৭৪টি কারখানা ছুটিতে গেছে, গত দুই দিনে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩৫টি। আগামী ২৮-২৯ মার্চের মধ্যে বাকি কারখানাগুলোও ছুটিতে যাবে।শিল্প পুলিশ ও বিজিএমইএ'র তথ্য অনুযায়ী, এবারে ২৪৫টি কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হলেও এখনো ১১টি কারখানা সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বিজিএমইএ কমিটি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব কারখানার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে ২০ রমজানের মধ্যেই শ্রমিকদের বেতন, ঈদ বোনাস এবং মার্চের বেতনের একাংশ পরিশোধ করতে হবে। সরকার শ্রম অসন্তোষ রোধে দ্রুত রপ্তানি আয়ের বিপরীতে উদ্যোক্তাদের সরকারি প্রণোদনার অর্থ ছাড় করেছে। এবারে তিন ধাপে মোট ২,২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি (৭০০ কোটি টাকা)।
বিজিএমইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত মার্চ মাসের বেতনের একাংশ পরিশোধ করেছে ১,৭৫৩টি (৮৩.২%) কারখানা।শ্রম মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রতিবেদন অনুসারে, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ ও বেপজার সদস্য কারখানার মধ্যে মার্চ মাসে সচল রয়েছে ২,৮৮৬টি। এর মধ্যে ২,৭৬৮টি (৯৫.৭৮%) কারখানা ফেব্রুয়ারির বেতন পরিশোধ করেছে এবং ২,১৬৭টি (৭৪.৯৮%) ঈদ বোনাস দিয়েছে। মার্চের বেতনের একাংশ পরিশোধ করেছে ৪৬২টি (১৪.৬০%)।অন্যদিকে, পাটকল ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট কারখানার সংখ্যা ৯,৬৯৫টি। এর মধ্যে মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে ১,৮৩৫টি (১৮.৯৩%) এবং ঈদ বোনাস দিয়েছে ৬,৬৭৩টি (৬৭.৮৩%)।