সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি যেসব অঞ্চলেবিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: সংশোধিত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৪৬ হাজারসকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
No icon

ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ ঠেকাতে রাশিয়ার প্রস্তুতি

সমুদ্র সৈকতের একটি অবকাশ কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয়েছে প্রতিরক্ষা দুর্গ। প্রতিপক্ষের অগ্রসরমান ট্যাঙ্ক ঠেকাতে প্রধান একটি সড়ক ধরে খনন করা হয়েছে পরিখা। স্যাটেলাইট থেকে তোলা কিছু ছবি বিশ্লেষণ করে বিবিসির ভ্যারিফাই বিভাগ বলছে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ ঠেকাতে রাশিয়া এধরনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে।কয়েক মাসের অচলাবস্থার পর ধারণা করা হচ্ছে যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত এই আক্রমণ ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হয়ে উঠতে পারে। কারণ এই পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে কিয়েভ প্রমাণ করতে চাইছে যে পশ্চিমাদের কাছ থেকে পাওয়া অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে তারা রণক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য রকমের বিজয় অর্জন করতে সক্ষম।স্যাটেলাইট থেকে তোলা এরকম শত শত ছবি পরীক্ষা করে বিবিসি ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করেছে যেখানে রাশিয়া পরিখা খনন করাসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।

১. ক্রাইমিয়ার পশ্চিম উপকূল

রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করে নেয় যা একসময় সমুদ্র সৈকতে গড়ে ওঠা অবকাশ কেন্দ্রের জন্য সুপরিচিত ছিল। এখন এই দ্বীপের ১৫ মাইল দীর্ঘ উপকূলে রোদ-নিবারক ছাতা যেমন নেই, তেমনি নেই সূর্যস্নান করতে যাওয়া লোকজনও। তার পরিবর্তে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রুশ সৈন্যদের স্থাপিত প্রতিরক্ষা স্থাপনা।নিচের ছবিতে ক্রাইমিয়ার পশ্চিম উপকূলে বালির একমাত্র খোলা সৈকতটি দেখা যাচ্ছে যেখানে পাহাড় অথবা উঁচু খাঁড়া ক্লিফের মতো প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই।প্রথমত সৈকতের তটরেখা ধরে আছে ড্রাগন্স টিথ। ড্রাগন্স টিথ হচ্ছে পিরামিড আকৃতির কংক্রিটের ব্লক। ট্যাঙ্কসহ অন্যান্য সামরিক যানের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়ার জন্য এসব ব্লক ব্যবহার করা হয়।তার পেছনেই আছে এক সারি পরিখা যা প্রতিপক্ষের আক্রমণ থেকে সৈন্যদের রক্ষা করবে। দীর্ঘ এই পরিখার বিভিন্ন স্থানে কিছু বাঙ্কারও দেখা যায়।এছাড়াও আছে কাঠের স্তূপ, খনন করার যান এবং ড্রাগন্স টিথের মজুত। এসব দেখে ধারণা করা যায় যে উপকূলজুড়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ এখনও চলছে। স্যাটেলাইট থেকে এসব ছবি তোলা হয়েছে গত মার্চ মাসে।কোনো কোনো সামরিক বিশেষজ্ঞ বলছেন রাশিয়া সতর্কতা হিসেবেই সেখানে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলছে বলে তারা ধারণা করছেন। এর অর্থ এই নয় যে রাশিয়া সমুদ্রপথে আসা কোনো আক্রমণ প্রতিহত করতে সেখানে এসব স্থাপনা বসিয়েছে। কারণ ইউক্রেনের নৌ ক্ষমতা খুবই সীমিত।তবে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক লায়লা গেস্ট বলছেন: স্থলপথে নয় বরং সমুদ্রপথে ক্রাইমিয়ায় ইউক্রেনের আক্রমণ প্রতিহত করতেই সম্ভবত এসব প্রতিরক্ষা ব্যূহ তৈরি করা হয়েছে।

২. টকমাক

ইউক্রেনের ছোট্ট একটি শহর টকমাক যা দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পথের মধ্যে পড়ে। রাশিয়ার দখল করে নেওয়া অন্যান্য অঞ্চল থেকে ক্রাইমিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ইউক্রেনীয় সৈন্যরা এই শহরটিকে ব্যবহার করতে পারে।খবরে জানা যাচ্ছে এই শহরটিকে একটি সামরিক দুর্গে পরিণত করার লক্ষে সেখান থেকে বেসামরিক ইউক্রেনীয় নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।এর ফলে সৈন্যদের কাছে রসদ সরবরাহ করা যাবে এবং একই সাথে প্রয়োজনের সৈন্যরা পিছু হটে এই ঘাঁটিতে এসে অবস্থান নিতে পারবে।স্যাটেলাইট থেকে তোলা উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে টকমাক শহরের উত্তরে দুটো রেখায় পরিখা নেটওয়ার্ক খনন করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী এই দিক থেকে রুশ সৈন্যদের ওপর আক্রমণ চালাতে পারে।এসব পরিখার পেছনে এই শহরের চারপাশ ঘিরে আরো কিছু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এসব প্রতিরক্ষার ব্যূহের রয়েছে তিনটি স্তর যা নিচের ক্লোজ-আপ স্যাটেলাইট ছবিতে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়।