গুমের সঙ্গে জড়িতরা রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব৫ দেশ ভ্রমণে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতাইসরায়েলি হামলায় লেবাননে একদিনে নিহত ৫৯নতুন নির্বাচন কমিশনের শপথ রোববারপ্রস্তুত হচ্ছে নির্বাচনী মাঠ
No icon

পারমাণবিক বোমার দামামা

রাশিয়ার হামলা আর অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ যুদ্ধে ইউক্রেনে ঝরছে রক্ত, বাড়ছে ধ্বংসস্তূপ। পশ্চিমা বিশ্বের অকুণ্ঠ সমর্থনে হামলাকারী রুশ বাহিনীকে রুখে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনের সেনা ও জনযোদ্ধারা। বিভিন্ন দেশ থেকে মুড়ি-মুড়কির মতো আসছে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সহায়তা। যুদ্ধের ময়দানের এসব খবর ছাপিয়ে হঠাৎ বিশ্ববাসীর সামনে এলো এক ভয়ংকর সংকেত। গতকাল রুশ প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন তার দেশের কৌশলগত বাহিনীকে (পারমাণবিক অস্ত্র বাহিনী) প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।পুতিনের বক্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে মার্কিন দূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন এমনভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, পুতিনের পারমাণবিক সতর্কাবস্থা বৃদ্ধি বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। বিষয়টি পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেছেন, এটি রাশিয়ার বানানো ও অপ্রয়োজনীয় হুমকি। এটি পুতিনের হুমকির ধারাবাহিকতামাত্র; পরবর্তী আগ্রাসনের ধাপ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না।পুতিন যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক বাহিনীর জন্য সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কাবস্থা। বিবিসির বিশ্নেষক গর্ডন কোরেরা বলছেন, এর অর্থ হচ্ছে, মস্কো একটি সতর্কবার্তা দিচ্ছে। সতর্কাবস্থার মাত্রা বৃদ্ধির ফলে কৌশলগত অস্ত্র ব্যবহার তাদের জন্য সহজতর হবে। বিষয়টি এমন নয়- বর্তমানে এ অস্ত্র ব্যবহারের ইচ্ছা রয়েছে পুতিনের।

রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বিশ্বের সর্ববৃহৎ। কয়েক দিন আগেই রুশ নেতা ইউক্রেন অভিযান চালানোর ঘোষণায় বলেছিলেন, কেউ এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে এমন পরিণতি হবে, যা ইতিহাসে কখনও দেখা যায়নি। একে তখন অনেকেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন।এবার আরেক ধাপ এগিয়ে পুতিন তার দেশের পরমাণু বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি শত্রুতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বেআইনি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিশেষ করে বৈশ্বিক ব্যাংকিং মেসেজ আদান-প্রদানের সুইফট সিস্টেম থেকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংককে বাদ দেওয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর পুতিন তার অবস্থান আরও কঠোর করেছেন।তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ ন্যাটো জোটের বাইরের কয়েকটি দেশ রাশিয়া ও পুতিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো যুদ্ধরত কোনো দেশ হিসেবে ইউক্রেনকে সামরিক অর্থায়ন ও অস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইইউ। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল কোম্পানি রসেনফেটের শেয়ার প্রত্যাহার করছে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম কোম্পানি। এসব চাপের মুখে পুতিন যে আরও কঠোর হবেন- তা ধারণা করাই যায়। এদিকে রাশিয়ার সাবেক উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই ফেদোরভ বলেছেন, ২ মার্চের মধ্যেই সফলতার সঙ্গে অভিযান শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রেসিডেন্ট পুতিনের।