ইত্যাদির অনুষ্ঠানে ভাঙচুর-মারামারি, যে কারণ জানা গেলআসছে রমজানে পণ্যের সরবরাহ নিয়ে শঙ্কাআজ ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’পঞ্চগড়ে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, বইছে হিমেল বাতাসবিডিআর বিদ্রোহের বিচারকাজ শুরু আজ
No icon

ক্রমেই জোরালো হচ্ছে নির্বাচনের দাবি

অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে মাঠে নামছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে আগামী জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এরই মধ্যে বাম গণতান্ত্রিক জোট, সমমনা দল, ১২ দলীয় জোটকে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামতে দেখা গেছে। রাজপথে না নামলেও দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পক্ষে গণফোরাম ও গণতন্ত্র মঞ্চ। এই দলগুলোর নেতৃত্বের ভাষ্য, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করলে সরকারের প্রতি জনগণের সন্দেহ ও অবিশ^াস তৈরি হবে। কেউ কেউ আবার কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, সরকারের সংস্কারকাজ করার যোগ্যতা নেই। সে কারণে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার তাগাদা দেন তারা।জানা গেছে, এসব দলগুলোর মধ্যে বিএনপির একটা যোগসূত্র রয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে এসব দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে দলটির। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সন্ধ্যায় এলডিপির সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়েছে। এর বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ আরও কিছু ইসলামি দল ও সংগঠন সংস্কার শেষে উপযুক্ত সময়ে নির্বাচনের পক্ষে। অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে তাদের তাড়াহুড়া নেই। তারা মনে করেন, দেশে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।এই প্রসঙ্গে গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি বেশি সংস্কার না চায়, তাহালে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী স্বৈরাচারের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দোসরদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবি শীর্ষক সমাবেশে ১২ দলীয় জোটের নেতারা বক্তৃতা করেন।

জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো কিছুই সমাধান করতে পারছেন না। সংস্কার করার যোগ্যতা এই সরকারের নেই। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সসম্মানে বিদায় নিন। এ সময় তিনি সহনীয় মূল্যে গ্যাস সরবরাহ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে সরকারের পদক্ষেপ চান।সমাবেশে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, জনগণ যা চায় তা বুঝে অবিলম্বে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যেই নির্বাচন দিন। ভোটারের বয়স ১৭ এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স করতে চান ২১ বছর। দুটোই সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা বলব, দেশে কচিকাঁচার সংসদ গড়বেন না। আপনাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। পাঁচ মাস ধরে কিছুই করতে পারছেন না। আইনশৃঙ্খলা, নিত্যপণ্যের বাজার- কোথাও শৃঙ্খলা আনতে পারছেন না। আমাদের মাঠে নামতে বাধ্য করবেন না।জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। কিন্তু আজ পাঁচ মাস হয়ে গেলেও সরকার কিছুই করতে পারেনি। আমি বলব, টালবাহানা না করে অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা শওকত আমিন, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির এমএ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) ফিরোজ মো. লিটন এবং লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম।এর আগে গত ১ জানুয়ারি লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সরকার (অন্তর্বর্তী) কী সংস্কার করবে, তা আমরা বুঝতে পারছি। সচিবলায়ে কারা আগুন লাগিয়েছে? সেই ফ্যাসিবাদী দোসরদের তো আপনারা (সরকার) সরাতে পারছেন না। আপনারা করবেন সংস্কার? সংস্কার তো নিয়মিত প্রক্রিয়া। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে, আপনাদের বিপক্ষে না। তবে আপনাদের আগামী জুন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, যে সংস্কারের কথা বর্তমান সরকার বলছে, সেই সংস্কার একমাত্র জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারই করতে পারে। সবাই সংস্কার চায়। কিন্তু কেউ বলছে না নির্বাচন ছাড়া সংস্কার কীভাবে সম্ভব? সংস্কার কি নির্বাচন ব্যতিরেকে? বর্তমানে যেহেতু সংবিধান বেঁচে আছে, তার অনুযায়ী নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।