মেগাসিটি ঢাকা এখন রেস্টুরেন্টের শহর। ভোজনরসিকদের জন্য নতুন ঢাকায় আন্তর্জাতিক চেইন রেস্টুরেন্ট যেমন আছে, তেমন আছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মোগল খাবারও। শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে ঢাকাবাসীর সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মিল রেখে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়ামহল্লা ও অলিগলিতে গড়ে উঠছে নিত্যনতুন রেস্টুরেন্ট। পুরনো খাবার হোটেলের চিরচেনা আদল পাল্টে ঢাকা ক্রমেই পরিণত হচ্ছে রেস্টুরেন্টের শহরে। নগরীর প্রধান সড়কগুলো ছাড়াও পাড়ামহল্লায় পুরনো দোকান উঠিয়ে বা ভাড়া বাড়িতে তৈরি হচ্ছে রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ও ফাস্টফুড শপ। পেটপূজার পাশাপাশি ঢাকাবাসীর কাছে এখন বিনোদনের অন্যতম স্থান হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চোখজুড়ানো সব রেস্টুরেন্ট। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, জনবহুল এ শহরে এখন খাবার দোকান বা রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ৪ লাখ ৮১ হাজার। স্বল্প ও মাঝারি মূলধনে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় তরুণ উদ্যোক্তা অনেকেই খাবারের ব্যবসায় ঝুঁকছেন। আর এ ব্যবসায় সম্ভাবনাও বেশ উজ্জ্বল। তবে এটি ধরে রাখতে হলে সরকারকে এ খাতের ব্যবসায়ীদের নিয়ে পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যেতে হবে। না হলে ব্যবসা বিদেশিদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট সার্ভে ২০২১-এর প্রতিবেদন বলছে, গত ১১ বছর সারা দেশের হোটেল ও রেস্টুরেন্টে প্রায় ১১ লাখ ৬৮ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে মোট হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি। ২০০৯-১০ সালে এ সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার। এর বেশির ভাগই বেসরকারি স্থায়ী মালিকানাধীন (৯৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ)। পাঁচ তারকা হোটেল ছাড়াও ঢাকা শহরজুড়ে বিভিন্ন শ্রেণির ভোজনরসিকের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে বুফে রেস্টুরেন্ট। এ ছাড়া খোলা আকাশের নিচে বসে খাবার উপভোগ করার জন্য আছে রুফটপ রেস্টুরেন্ট। এর মধ্যে কিছু রেস্টুরেন্ট আবার দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। আছে এলাকাভিত্তিক (মেজবান, চুইগোস্ত) ও উপজাতিদের বিশেষ খাবারের দোকান। নতুনত্ব আনতে এখন হোটেল-রেস্টুরেন্টে রোবট দিয়ে খাবার পরিবেশন ও সেবা দেওয়া হচ্ছে। রেস্টুরেন্টগুলোয় আছে সামুদ্রিক খাবার, বিয়েবাড়ির খাবারসহ টার্কিশ, লেবানিজসহ বিভিন্ন দেশের খাবারের স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা।