৩ দিন ভারত ভ্রমণে যেতে পারবেন না বাংলাদেশিরাসৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যুঢাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিদেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
No icon

কেমন হল চঞ্চল চৌধুরীর ‘কারাগার ২’?

কেমন হল চঞ্চল চৌধুরীর কারাগার ২? প্রথম পর্বের মতো জমল কি,। প্রথম পর্ব মুক্তি পাওয়ার পরেই রীতিমতো ঝড় বয়ে গিয়েছিল বাংলা ওয়েব সিরিজ়ের জগতে। চঞ্চল চৌধুরীর নির্বাক অভিনয় মুগ্ধ করেছিল সকলকে। সিরিজ়ের দ্বিতীয় পর্ব কেমন হল?

অগস্ট মাসে নড়েচড়ে বসেছিল গোটা টলিউড। ও পার বাংলার এমন এক ওয়েব সিরিজ় স্ট্রিম করা শুরু করে, যে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এমন ওয়েব সিরিজ় বাংলায় আগে হয়নি। ধীরে ধীরে কারাগার-এর জনপ্রিয়তা দুই বাংলাতেই সমান ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। চঞ্চল চৌধুরীর নির্বাক অভিনয় মুগ্ধ করেছিল সব বয়সের দর্শককে। এই সিরিজ় এবং চঞ্চলকে নিয়ে উন্মাদনা এতটাই ছিল যে, তার আঁচ গিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবেও। চঞ্চল অভিনীত হাওয়া দেখতে লোকে লাইন দিয়েছিলেন তিন-চার ঘণ্টা ধরে। সেই সিরিজ়ের দ্বিতীয় পর্ব আসছে হইচই-এ। ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু স্ট্রিমিং। কিন্তু প্রথম ভাগের মতো জমল কি এই ভাগও?
কারাগার পার্ট ওয়ান-এ রহস্য ঘনাচ্ছিল। ১৪৫ নম্বর সেলের কয়েদি আসলে কে? সে কি সত্যিই বোবা? কী করে এল জেলের ভিতর? সে কি সত্যিই ২৫০ বছর ধরে বেঁচে রয়েছে? জেলার মোস্তাকের ছেলের গল্পটাই বা কী? মাহার বাবা কে? নানা প্রশ্ন দানা বেঁধেছিল দর্শকের মনে। কিন্তু এই পর্বে সেই প্রশ্নের উত্তরগুলি মিলছে। সব যে খুব মনোমতো হচ্ছে, তা নয়। হয়তো কোনওটির উত্তর পেয়ে চিত্রনাট্যের তারিফ করতে ইচ্ছা করবে, আবার কোনওটির উত্তর পেয়ে মনে হতে পারে, এটা তেমন জমল না। আবার সব উত্তর যে দ্বিতীয় পর্বে পেয়ে যাবেন, তেমন নয়। কিছু কিছু সুতো যেন আলগা রয়ে গেল সাতটি এপিসোডের শেষেও।
আরও একটি অনুযোগ থাকবে চিত্রনাট্যের কিছু সাব প্লট নিয়ে। প্রথম পর্বে যেখানে অনেক সাব প্লট বেশ সযত্নে চিত্রনাট্যের সঙ্গে বুনে দেওয়া হয়ছিল, এ পর্বে যেন সেগুলি খানিক অবহেলিত। হয় সেই গল্প আর এগোয়নি, অথবা কোনও রকমে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে দর্শকের মনের আশা পূরণ না-ও হতে পারে।

তবে কারাগার পার্ট টু দর্শকের মনে জিতে নেবে দুই জায়গায়। এক, অভিনয়। দুই, মেকিং। চঞ্চলের মুখে এ বার অনেক সংলাপ জুড়লেও তাঁর চোখ অভিনয় করা থামায়নি। মোস্তাকের চরিত্রে ইন্তেখাব দিনার কিংবা আশফাকের চরিত্রে এফ এস নাঈম বা মাহার চরিত্রে তাসনিয়া ফারিন আগের ভাগেও যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এই পর্বে বিশেষ করে চোখে পড়বে জল্লাদ এবং রাজুর চরিত্র। এই সিরিজ়ের বিপুল জনপ্রিয়তার পিছনে অনেকটাই কৃতিত্ব রয়েছে অভিনেতাদের।
অবশ্য শুধু অভিনয় নয়, সিরিজ়ের মেকিংও যথেষ্ট প্রশংসার দাবিদার। এই পর্বেও আগের মতোই আবহসঙ্গীত, ক্যামেরা, ট্রিটমেন্ট সবই গল্পের আমেজ গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পরিচালক সৈয়দ আহমেদ শাওকী সাসপেন্স তৈরি করতে যতটা পারদর্শী, দর্শকের মনে আবেগ তৈরি করতে হয়তো ততটা নন। মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকারদের অত্যাচার, একটি গোটা প্রজন্মের অস্তিত্ব সঙ্কট গল্পে রয়েছে অনেক কিছুই। কিন্তু চরিত্রগুলির সঙ্গে সে ভাবে একাত্মতা না-ও তৈরি হতে পারে।

তবে বলে রাখা ভাল যে, এ সবই আগের পর্বের সঙ্গে তুলনা টানলে তবেই প্রযোজ্য। না হলে কারাগার টু এ বছরের সেরা বাংলা ওয়েব সিরিজ়ের তালিকা বানালে নিঃসন্দেহে উপরের দিকেই থাকবে। গল্পের গতি কখনওই ধীর হয় না। কোনও দৃশ্য অতিরিক্ত মনে হবে না। গল্প বলার মাপা শৈলী এই ভাগেও অব্যাহত। আর ছবির ট্রেলারে ডেভিডের মুখের সংলাপ ধার করেই বলা যায়, এভরিবডি লাভস আ গুড স্টোরি।