ঢাকা ছাড়লেন ডোনাল্ড লু বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছেড়েছেন শান্ত-সাকিবরাদেশের পাঁচ বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারিমে মাসের শেষ দিকে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়রাজশাহীতে বাগান থেকে গুটি আম নামানো শুরু
No icon

নিত্যপণ্যের দাম শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি

দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য মুদ্রানীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থনৈতিক দিক দিয়েও এগিয়ে যাবে দেশ। মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করা, যেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এছাড়া মুদ্রাবিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও মুদ্রানীতির অন্যতম কাজ।কিন্তু বর্তমানে মূল্যস্ফীতির আগুনে পুড়ছে শহর থেকে গ্রাম, কমছে টাকার মানও। গ্রামীণ এলাকায় মূল্যস্ফীতির হার সবচেয়ে বেশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের দাম শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি। যার মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে বেশি।জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষ অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। শহরে খাদ্যের বড় অংশের জোগান আসে গ্রাম থেকে। এ কারণে গ্রামের চেয়ে শহরে খাদ্য উপকরণের দাম বেশি হারে বাড়ার কথা। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও গ্রামের চেয়ে শহরে বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু তা না হয়ে গ্রামেই মূল্যস্ফীতির হার বেশি বাড়ছে। এটা কেন হলো- তা খতিয়ে দেখা দরকার।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন অর্থাৎ ১৭ মাস শহরের থেকে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার বেশি। চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তা ছাড়িয়ে গেছে। গত (২০২০-২১) অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৬ শতাংশ অতিক্রম করে। চলতি অর্থবছর পর পর তিন মাস গ্রামে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। যেখানে শহরে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের নিচে ছিল। মার্চে শহরের তুলনায় গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি। এ সময় গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ ও শহরে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ ছিল। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে শহরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। একই সময়ে গ্রামে ছিল ৬ দশমিক ৭ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া মার্চে ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্যে এমনটা বলা হয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, মূলত খাদ্যের দাম বেশি বেড়েছে। মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার বড় অংশই খাদ্যপণ্যে। গ্রামের মানুষ খাবারের জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করে। শহরে ধনী ও বিত্তবানদের বাস বেশি। তারা খাদ্যখাত থেকে খাদ্যবহির্ভূত খাতে বেশি ব্যয় করে। তবে, খাদ্যবহির্ভূত খাতে দাম বেশি বাড়েনি। খাদ্যে দাম বাড়লেও গ্রামের ১০০ টাকা আয় করলে ৮০ টাকা খাদ্যে খরচ করে। অন্যদিকে, শহরের মানুষ ২০০ টাকা আয় করলে ১৬০ টাকা কিন্তু খাদ্য খাতে খরচ করে না। দেখা যায়, তারা বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য খাদ্যবহির্ভূত খাতে খরচ করে।বিবিএস জানায়, সর্বশেষ জুনে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এসময় শহরে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ অথচ গ্রামে ৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ সময় যত গড়াচ্ছে ততই শহর থেকে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে।