দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলবিএনপির আরও চার নেতাকে বহিষ্কারবিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুই প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি ঘোষণা রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ল রিলাক্স পরিবহনের বাস, নিহত ৫ আহত ১৫
No icon

প্রবাসী আয়ের জন্য ব্যাংকে কাড়াকাড়ি

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞার কারণে এক ব্যাংকের রপ্তানি বিল আরেক ব্যাংক কিনতে পারছে না। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক লেনদেনে দর নিয়ন্ত্রণ করায় এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে না। এ অবস্থায় ডলারের চাহিদা মেটানোর বড় ভরসা এখন প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। ফলে রেমিট্যান্স নেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোতে কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। এ সুযোগে প্রতিদিনই দর বাড়াচ্ছে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো। এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে গতকাল সর্বোচ্চ ১০৮ টাকায় ডলার কিনেছে কোনো কোনো ব্যাংক, আগের দিন যা ছিল ১০৬ টাকা। শুধু রেমিট্যান্স নয়; আমদানি-রপ্তানি ও নগদ ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, ডলারের ওপর চাপ কমাতে আমদানি কমানোর উদ্যোগের সুফল এখনও বাজারে তেমন পড়েনি। ডলারের চাহিদা এখনও ব্যাপক। ব্যাংকগুলো যাতে দায় পরিশোধে ব্যর্থ না হয়, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি এক্সচেঞ্জ হাউসে ধরনা দিচ্ছে। এ সুযোগে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো দর বাড়াচ্ছে। যেসব ব্যাংকের সংকট বেশি তাদের এই বাড়তি দরে না কিনে কোনো উপায় নেই। গত সপ্তাহ পর্যন্ত ১০২ থেকে ১০৩ টাকায় রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছিল ব্যাংকগুলো।
গত ২৬ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদার সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে সব ব্যাংক অভিন্ন দরে ডলার কিনবে। বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। বরং পরিমাণ, ব্যাংক ও দেশভেদে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো ভিন্ন ভিন্ন দর নিচ্ছে।

ডলার বিক্রি একশ কোটির ঘর পেরোল :বুধবার কয়েকটি ব্যাংকের কাছে আরও ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস শেষ হওয়ার আগেই বিক্রি একশ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গতকাল পর্যন্ত মোট বিক্রি করা হয়েছে ১০৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ৩৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়নে নেমেছে। ব্যাংকগুলোর কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে। সর্বশেষ গত সোমবার প্রতি ডলারে ২৫ পয়সা বাড়িয়ে এ রকম দর নির্ধারণ করা হয়। এ নিয়ে গত এক বছরে প্রতি ডলারে বাড়ানো হয় ৯ টাকা ৯০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাস পর্যন্ত আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। একই সময় পর্যন্ত রপ্তানি আয় হয়েছে চার হাজার ৪৫৮ কোটি ডলারের। এতে করে প্রথম ১১ মাসে রেকর্ড তিন হাজার ৮২ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একই সময়ে রেমিট্যান্স প্রায় ১৬ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯১৯ কোটি ডলারে নেমেছে। যে কারণে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ১৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঘাটতি তৈরি হয়েছে। অবশ্য আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের নেওয়া উদ্যোগে আমদানি ব্যয় কমলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে করেন সংশ্নিষ্টরা।