সিপিবি নেতা হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেনকষ্টার্জিত জয়ে ব্যবধান ৪-০ করল বাংলাদেশস্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনের পক্ষে বাংলাদেশসহ ১৪৩ দেশসকালে সন্ধ্যা নেমে এলো ঢাকায়, নামল স্বস্তির বৃষ্টিআগামী ৩ দিন যেমন থাকবে আবহাওয়া
No icon

জ্বালানিতে অশনিসংকেত

সাত বছর আগেই পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। তেল-গ্যাসসহ সাগরের খনিজসম্পদ সম্পর্কে ধারণা পেতে জরিপ চালাতে আন্তর্জাতিক দরপত্র কয়েকবার বাতিল হয় প্রভাবশালীদের চাপে। এখনও বঙ্গোপসাগরে জরিপ কাজ শুরু হয়নি। যদিও ভারত ও মিয়ানমার তাদের সীমানায় গ্যাস আবিস্কার করেছে। দেশে গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম হু-হু করে বাড়ছে। এই খাতের বিভিন্ন প্রকল্প বছরের পর বছর আটকে থাকছে। জ্বালানি সংকট আগামীতে আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্নেষকরা। তারা মনে করছেন, জ্বালানি খাতে অশনিসংকেত দেখা যাচ্ছে।সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের একাধিক উদ্যোগ বারবার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আটকে গেছে। কয়েকটি প্রকল্প ঝুলে আছে দশক ধরে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জ্বালানি খাতে। ঘাটতি মেটাতে ব্যয়বহুল এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করেও সংকট মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। যদিও জ্বালানি বিভাগ দাবি করছে, সাগরের সম্পদ আহরণে কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।অভিযোগ রয়েছে, বছরের পর বছর জ্বালানি খাত উন্নয়নে বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে স্বার্থান্বেষী প্রভাবশালী মহল। পছন্দের কোম্পানি কাজ না পাওয়ায় বারবার দরপত্র বাতিল হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশ এগিয়ে গেলেও তেল-গ্যাস আবিস্কারে পিছিয়ে পড়েছে জ্বালানি খাত।এক যুগ আগে দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ঘাটতি ভয়ানক পর্যায়ে ছিল। বিদ্যুতের লোডশেডিং আর গ্যাসের স্বল্পতায় বাসাবাড়ি থেকে শিল্পকারখানা- সবকিছু জেরবার অবস্থায় পৌঁছেছিল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নতির জন্য বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

কিছু সমালোচনা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে সাফল্য আসে। কিন্তু সার্বিক জ্বালানি খাতের বলার মতো অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে সংশ্নিষ্টরা মনে করেন।জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। স্থলভাগে নতুন গ্যাসক্ষেত্র মিলছে না। কয়লা উত্তোলনেও কোনো উদ্যোগ নেই। সমুদ্রই এখন দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বড় ভরসা। কিন্তু সেখানে অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনও শুরুই হয়নি। সরকার মূলত তাকিয়ে আছে আমদানির দিকে। এখন বিশ্ববাজারে পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম বাড়ছে হু-হু করে। তাই আমদানিনির্ভরতা অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর পুরো নির্ভরশীল হওয়া বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে আমদানিনির্ভরতা কমাতে দেশে তেল-গ্যাস সম্পদের অনুসন্ধান বাড়াতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি খাতে লুটেরাদের দাপট অনেক বেশি। এখানে ব্যক্তি বিশেষের প্রভাবে প্রকল্প বাতিল হয়, কোনোটা স্থবির হয়ে থাকে। সরকার শক্তভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গতি আসবে না বলে তিনি মনে করেন।