সাগরে নিম্নচাপ, সমুদ্রবন্দরে সতর্ক সংকেতগাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহতচব্বিশের নির্বাচনে অংশ নেওয়া সদস্যকে অব্যাহতি দিল নাগরিক কমিটিবৃষ্টি হতে পারে দেশের কয়েক জায়গায়, কমতে পারে রাতের তাপমাত্রাকায়রোতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীর সাক্ষাৎ
No icon

তালিকা হচ্ছে আন্দোলন দমনকারী পুলিশের

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে গিয়ে হত্যা ও গণহত্যায় অংশ নেওয়া পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আন্দোলন দমনের নামে পুলিশের কার কী ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত সংস্থা। এরপর অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে ১৮ ও ১৯ জুলাই এবং ৩ থেকে ৫ আগস্ট পাঁচ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কার কার নির্দেশে গুলি করা হয়েছিল, কে কত গুলি করেছিল, মাঠ পুলিশের কোন কোন সদস্য আন্দোলন দমনে অংশ নিয়েছিল তার বিস্তারিত তথ্য জানতে ডিএমপিকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। সে অনুযায়ী ডিএমপি কাজ শুরু করেছে।আন্দোলন চলাকালে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের বিরুদ্ধে। এ কারণে দলীয়প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী, এমপিদের পাশাপাশি এসব ক্যাডারেরও বিচারের আওতায় আনতে তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত সংস্থা। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।বিচার শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে ১৮ ও ১৯ জুলাই এবং ৩ থেকে ৫ আগস্ট ৫ দিনে এই পাঁচ দিন রাজধানীতেমোতায়েনকৃত পুলিশ ফোর্সের সিসির (কমান্ড সার্টিফিকেট) তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে। এ ছাড়া ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ডিএমপির সব থানার ওসিসহ কর্মকর্তা এবং ডিবির এসআই-পরিদর্শকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জমা দিতে বলা হয়েছে অস্ত্রের ব্যালিস্টিকস পরীক্ষার রিপোর্ট। ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনালের চাহিদা অনুযায়ী, তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে ডিএমপিও। ঢাকায় ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে চায়নিজ রাইফেল দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। এতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ হতাহত হয়।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার গতকাল শুক্রবার রাতে   বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের পুলিশের সিসিসহ সব কিছু নথিভুক্ত আছে। আমরা তথ্য পাঠাব।ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত ৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে জুলাই-আগস্টে ডিএমপিতে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে। ডিএমপি পরে সেই চিঠি প্রত্যেক ডিসিকে পাঠায়। ডিসিরা তাদের অধীনস্থ থানা ও বিভাগের কর্মকর্তাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করছে। তবে এখনো তথ্য সংগ্রহের কাজ বাকি রয়েছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলে ডিএমপি সদর দপ্তরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চাহিদানুযায়ী তথ্য পাঠানো হবে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাজহারুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সাবেক সরকারের বিভিন্ন বাহিনী এবং দলীয় ক্যাডাররা ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে মর্মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়ায় মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে ডিএমপির সকল বিভাগের মোতায়েন হওয়া ফোর্সের সিসির সত্যায়িত কপি ও অস্ত্রের ব্যালিস্টিক পরীক্ষার রিপোর্ট প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো।