ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রশ্নপত্রটি যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালেই প্রশ্নপ্রণেতা ও চার মডারেটরকে চিহ্নিত করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। বিতর্কিত এই প্রশ্নপ্রণেতা হচ্ছেন ঝিনাইদহের মহেশপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল। আর এ প্রশ্নপত্র মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।প্রশ্নপত্রটি যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীন কলেজের শিক্ষকরা করায় এ বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানীকে প্রধান করে গতকাল তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাবে যশোর শিক্ষা বোর্ড।জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সমকালকে বলেন, যিনি এই বিতর্কিত প্রশ্ন করেছেন ও যাঁরা মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁরা যে অপরাধ করেছেন, তা প্রমাণিত। সাধারণত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এমপিও বাতিল হতে পারে। আর যাঁরা সরকারি শিক্ষক, তাঁদের ব্যাপারে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। আর এসব শিক্ষকের আজীবন বোর্ডের সব কার্যক্রম থেকে বহিস্কার করা হতে পারে।জানা যায়, এসএসসির পরীক্ষার প্রথম দিন গত রোববার ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রশ্ন করা হয়। ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক প্রশ্ন নিয়ে সারাদেশেই তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা প্রশাসনও দ্রুততার সঙ্গে প্রশ্নকারী ও মডারেটরদের চিহ্নিত করেছেন।যশোর অফিস জানায়, যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানিয়েছেন, ওই প্রশ্ন প্রণয়নকারী এবং চারজন মডারেটর সবাই যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। ঢাকা বোর্ড তাঁদের চিহ্নিত করে গতকাল যশোর বোর্ডকে জানিয়েছে।তিনি আরও জানান, পাবলিক পরীক্ষায় এমন বিতর্কিত প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।