রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকটে যখন বিপর্যস্ত দেশ, তখন ভোলার একটি গ্যাস কূপে ৮ হাজার ৬০ কোটি টাকার গ্যাস পেয়েছে সরকার। সংকটকালে এ গ্যাস দেশের শিল্পোৎপাদনে কাজে লাগবে। ভোলার টবগী-১ অনুসন্ধান কূপে এই গ্যাসের মজুদ পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে, প্রায় ৩০ বছর পর্যন্ত।গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ও বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।প্রতিমন্ত্রী লিখিত তথ্য থেকে জানান, অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ ধরা হয়েছে প্রায় ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট। কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন বিবেচনায় ৩০ বছর গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে। টবগী-১ কূপে গ্যাসের বর্ণিত মজুদ বিবেচনায় গ্রাহক পর্যায়ে এ গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮ হাজার ৬০ কোটি টাকা, যার দাম এলএনজি আমদানির মূল্য বিবেচনায় অনেক গুণ বেশি হবে।
নসরুল হামিদ জানান, আগামী বছর জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও দুটি কূপের (ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২) খনন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে তিনটি কূপ হতে প্রতিদিন ৪৬ থেকে ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে।তবে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে ভোলার গ্যাস এখনই জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে প্রসেস প্লান্ট বসাতে হবে। এজন্য অন্তত দেড় বছর সময় প্রয়োজন হবে। তা হলে অফগ্রিডের গ্যাস আনার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন স্বল্প পরিসরে গ্যাস আনা হবে। পরে স্থায়ীভাবে ভোলা-বরিশাল হয়ে পাইপলাইন করা হবে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশীয় জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০২২-২০২৫ সময়কালের মধ্যে পেট্রোবাংলা মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট ভোলা জেলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের টবগী-১ অনুসন্ধান কূপটি প্রায় ৩ হাজার ৫০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত খননের লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ৩ হাজার ৫২৪ মিটার গভীরতায় খননকাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়।