সাংবাদিক নেতা মোল্লা জালাল গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজইসি গঠনে ৭ নভেম্বরের মধ্যে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটিইসরাইলি হামলায় আরও ৩১ ফিলিস্তিনি নিহতআজ সংবিধান দিবস
No icon

মানহীন সঞ্চালনে হারাচ্ছে দম

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা নতুন নয়। গত ৬ সেপ্টেম্বরও দেশের বড় একটি অংশ গ্রিড বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয়টি ঘটে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। ওই দিন সারাদেশই হয়ে যায় ব্ল্যাকআউট। এ ছাড়া ২০০২, ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১৭ সালে বড় ধরনের গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। আর আঞ্চলিক বিভ্রাট তো গা-সওয়া হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লেও সঞ্চালন ব্যবস্থাপনা আধুনিক হয়নি সেভাবে। তাঁরা বলছেন, রেন্টাল-কুইক রেন্টালসহ অনেক বেসরকারি কেন্দ্রে মানহীন যন্ত্রপাতি ব্যবহার, সঞ্চালন ব্যবস্থাপনায় পুরোপুরি আধুনিকায়ন না করা ও অ্যানালগ পদ্ধতিতে (ফোনে ফোনে) লোড ব্যবস্থাপনার কারণে জাতীয় গ্রিডে ঘন ঘন বিপর্যয় ঘটছে।গ্রিড বিপর্যয় কেন: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঞ্চালন লাইনের ফ্রিকোয়েন্সির (তরঙ্গ) ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে মূলত বিপর্যয় ঘটে। এটি হতে পারে হঠাৎ কোনো এলাকায় চাহিদা খুব বেশি বেড়ে বা কমে গেলে। এ ছাড়া অন্য কারিগরি কারণেও ফ্রিকোয়েন্সির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ওই গ্রিডে সংযুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হুট করে পরিবর্তিত চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থ হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

সঞ্চালন লাইনের ফ্রিকোয়েন্সির ভারসাম্য ঠিক রাখতে কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়। এতে ফ্রিকোয়েন্সির ভারসাম্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফলে বিপর্যয় একটি এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। ২০১৪ সালের নভেম্বরের ব্ল্যাকআউটের পর এই যন্ত্রপাতি লাগানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনছে। গ্রিডে কয়লা, গ্যাস, সৌরসহ নানা উৎস থেকে বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে। সামনে পারমাণবিক বিদ্যুৎ আসবে। সব মিলিয়ে গ্রিডে ফ্রিকোয়েন্সির ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি, না হলে বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে।ফোনে ফোনে লোড ব্যবস্থাপনা: দেশের বিদ্যুতের চাহিদা, উৎপাদন, সঞ্চালন পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় লোড ডেসপাস সেন্টার (এনএলডিসি)। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্র দিনরাত কত ঘণ্টা সচল থাকবে, কখন কত মেগাওয়াট উৎপাদন করবে তাও নির্ধারণ করে এনএলডিসি। আধুনিক সঞ্চালন ব্যবস্থায় এনএলডিসি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে এসব কাজ করে। তবে বাংলাদেশে তা হয় না। এখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু ও বন্ধের নির্দেশনা, কেন্দ্রে কত মেগাওয়াট উৎপাদন করবে- এর জন্য ঘণ্টায় ঘণ্টায় ফোনে নির্দেশনা দেওয়া হয়।ফলে কোথাও চাহিদা বাড়লে বা কমলে সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।