দেশে কয়েক মাস ধরে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। গ্যাসের অভাবে দিনের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ রাখতে হচ্ছে অনেক শিল্পকারখানা। কোনো কোনো শিল্পকারখানা চলছে জেনারেটরে। নিয়মিত গ্যাস পাচ্ছেন না আবাসিকের অনেক গ্রাহকও। কিন্তু গ্যাসের সরবরাহ নিয়ে আরও দুঃসময় অপেক্ষা করছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাসের (এলএনজি) পরিমাণ আরও কমে যাবে। এতদিন যেখানে গড়ে ৪০ কোটি ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে আসছিল, আগামী দুই মাস সেটি গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি ঘনফুটে নেমে আসবে।দাম বেশি হওয়ায় এমনিতেই স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ। এর মধ্যে চলতি অক্টোরব ও নভেম্বরে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এলএনজির পরিমাণ কমে যাবে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এতদিন কাতার থেকে গড়ে প্রতিমাসে পাঁচটি করে এলএনজির কার্গো আসত।
কিন্তু চলতি অক্টোবর ও আগামী নভেম্বরে আসবে চারটি করে। ফলে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ কমে যাবে। অর্থাৎ এতদিন যেখানে প্রতিমাসে গড়ে ৪০ কোটি ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতো, আগামী দুই মাস সেটি কমে দাঁড়াবে ৩০-৩৫ কোটি ঘনফুটে। কার্গো কমে যাওয়া নিয়ে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা চিন্তায় পড়ে গেছেন। এই সময়ে দেশে গ্যাসের চাহিদা কী করে সামাল দেবেন, সেটি নিয়ে পরিকল্পনা করছেন পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা।বাংলাদেশ তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) বিষয়টি নিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। সেখানে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশে এলএনজি আমদানি করে রাষ্ট্রায় কোম্পানি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমান ও কাতার থেকে প্রতিমাসে পাঁচটি করে এলএনজি কার্গো (জাহাজ) আনা হচ্ছে। এতে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়ছে প্রায় ১৫ মার্কিন ডলার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে এই দাম ছিল ১০ ডলারের কম। আর সিঙ্গাপুরের খোলাবাজার থেকে কেনা এলএনজি নিয়ে প্রতিমাসে তিনটি করে জাহাজ আসার কথা। স্পট মার্কেট থেকে গত বছর প্রতি ইউনিট এলএনজি আমদানি করা হতো ৫ থেকে ৬ ডলারের মধ্যে। এখন বিশ^বাজারে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ৬০ ডলারের বেশি। গত জুনেও তা ৩৬ ডলারে ছিল।জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জ্বালানি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে একটি টিম গত সপ্তাহে কাতার গেছে এলএনজি আমদানি বাড়ানোর লক্ষ্যে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আরও বেশি করে এলএনজি আমদানি করতে চায় সরকার।