বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, এদেশে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ ও অন্য প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় তাঁর দেশ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষকে নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আগামী নির্বাচন অবাধ হচ্ছে কিনা- সেদিকে পুরো বিশ্ব লক্ষ্য রাখছে। জবাবদিহির আওতায় না আসা পর্যন্ত র;্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং ফ্রেডরিক-এবার্ট-স্টিফটুং, বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে মিট দ্য অ্যাম্বাসাডর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, এতদিন যুক্তরাষ্ট্র সেবা খাতে সহযোগিতা করে আসছিল। তাতে মৌলিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা ছিল। এখন এটা পরিবর্তনের সময় এসেছে। তাঁরা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে সহযোগিতা দিতে চান। বিশেষ করে সুশাসন, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন, বিচার বিভাগ এবং অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে চায়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়। বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন চায় তাঁর দেশ। যুক্তরাষ্ট্র চায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান, যেখানে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে নিজেদের সরকার নির্বাচন করতে পারবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সরকার, গণমাধ্যম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলসহ সবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাইছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পর্ক বাড়াতে চাই। এর মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনীগুলোকে একে অপরকে লজিস্টিক সহায়তা, সরবরাহ এবং সেবা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। অন্য চুক্তিটির মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক বাহিনী ইচ্ছা করলে একে অপরের সঙ্গে গোপনীয় তথ্য বিনিময় করতে পারবে এবং বিনিময়কৃত তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষা উভয় পক্ষ রক্ষা করবে।এ ছাড়া আলোচনায় জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলা, নারীদের ক্ষমতায়ন, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষা, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ক ইত্যাদি বিষয়ও আলোচিত হয়েছে।সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। এ সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন নাগরিকদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই ধরনের সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।