৩ দিন ভারত ভ্রমণে যেতে পারবেন না বাংলাদেশিরাসৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যুঢাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিদেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
No icon

রেলে টাকা খরচের স্বচ্ছতায় কোপ

টাকা খরচের স্বচ্ছতায় কোপ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে। দেড়শ বছরের বেশি সময় ধরে চলা রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে স্বাধীন হিসাব বিভাগকে রেলের অধীন করা হয়েছে। এতে টাকা খরচ ও হিসাব দুই-ই রেলের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। রেল যেভাবে চাইবে, সেভাবেই হিসাব হবে।সংশ্নিষ্টরা বলছেন, কোনো সরকারি দপ্তরে এমন নজির নেই। হিসাব বিভাগ রেলের অধীন হলে দুর্নীতি ও অপব্যয় বাড়বে। এর আগে এটা মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন ছিল। হিসাব বিভাগকে রেলের অধীন করার চেষ্টাকে আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছে সিএজির কার্যালয়। যেমন, চলতি অর্থবছরে রেলওয়ের বাজেট ১৭ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা। সরকারি এ বরাদ্দ সরাসরি খরচ করতে পারবে না রেলওয়ে। রেলের অর্থ ও হিসাবকে জানাতে হয় কেন, কীভাবে, কত টাকা খরচ হবে। হিসাব বিভাগ প্রাক-নিরীক্ষা (প্রি-অডিট) করে রেলের আর্থিক দাবি (বিল) মেটাতে টাকা দেবে। অসংগতি থাকলে বিল কাটছাঁট করবে। অনিয়ম ঠেকাতে এ চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সেস বা ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার ব্যবস্থা সেই ১৮৫৮ সাল থেকেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো মেনে চলছে।

হিসাব বিভাগ রেলেরই অংশ; কিন্তু তাদের অধীন নয়। ফলে হিসাব বিভাগের ওপর রেলের খবরদারি চলে না। হিসাব বিভাগের কর্মকর্তারা অডিট ক্যাডারের। তাঁরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সিএজির অধীন। সরকারি নিয়ম মেনে আর্থিক স্বচ্ছতা রক্ষায় ব্যয়কারী বা প্রশাসনিক নির্বাহীর কাছে টাকা রাখা হয় না। যে বিভাগের কাছে টাকা থাকে, তাদের খরচের এখতিয়ার নেই। এ কারণে সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান নিজের হিসাব নিজে করে না। তা সিএজির অধীন অডিট ক্যাডারের কাজ।কিন্তু নতুন জনবল কাঠামোতে হিসাব বিভাগকে নিজেদের অধীনে নিয়েছে রেলওয়ে। সিএজি থেকে বদলির পরিবর্তে প্রেষণে অডিট কর্মকর্তাদের হিসাব বিভাগে চায় রেল। সংশোধিত জনবল কাঠামোতে রেল ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরও হিসাব বিভাগে বদলির সুযোগ রাখা হয়েছে। হিসাব বিভাগের অফিসের সংখ্যা কমেছে। এতে পে-পয়েন্ট বন্ধ হওয়ায়, আগামী মাসে রেলকর্মীদের বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

হিসাব বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রেলে সরকারি টাকার ব্যয় ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা- তা দেখা তাঁদের কাজ। রেলের অধীনে যাওয়া মানে,চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সেস থাকবে না। বদলি, পদায়ন ও বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) লেখার ক্ষমতা রেলের কাছে গেলে হিসাব বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়বেন। এ অবস্থায় চাকরি ঠিক রাখতে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় টাকা ছাড় ও বিল-ভাউচার অনুমোদনে বাধ্য হবেন তাঁরা।১৯৮০ সালে সিভিল, সশস্ত্র ও রেলওয়ে অডিটকে একীভূত করে অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডার গঠিত হয়। অন্য সব ক্যাডার সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীন হলেও অডিট ক্যাডার সিএজির নিয়ন্ত্রণে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও তাদের কাছে জবাবদিহি করে। সংবিধানের ১২৮ (৪) অনুচ্ছেদ সরকারি হিসাব ও সম্পদ নিরীক্ষা স্বচ্ছতার স্বার্থে সিএজিকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।