দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলবিএনপির আরও চার নেতাকে বহিষ্কারবিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুই প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি ঘোষণা রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ল রিলাক্স পরিবহনের বাস, নিহত ৫ আহত ১৫
No icon

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংকট কাটাতে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চলমান সংকট কাটাতে সাশ্রয়ের পথে হাঁটছে সরকার। সেই প্রেক্ষাপটে আজ মঙ্গলবার এলাকাভিত্তিক বিদ্যুতের শিডিউল লোডশেডিং শুরু হচ্ছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে আপাতত এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। খরচ কমাতে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সপ্তাহে এক দিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ এবং অফিসের সময়সূচি কমিয়ে আনার বিষয়টিও ভাবছে সরকার। সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অফিস-আদালত ও উপাসনালয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) যন্ত্র ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাত ৮টার পর দোকানপাট, বিপণিবিতান খোলা রাখলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কঠোর বার্তা দিয়েছে সরকার।বিদ্যমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ সংশ্নিষ্ট খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এসব সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

তবে সংশ্নিষ্ট বিশেষজ্ঞরা সরকারের এসব পদক্ষেপে খরচ সাশ্রয় নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে লোডশেডিং করলে ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জেনারেটরে ব্যবহার বাড়বে। ফলে এ খাতে ডিজেল বেশি ব্যবহূত হবে। এক দিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখলে ব্যবহার কমবে না, উল্টো পাম্পে তেল নিতে ভিড় বাড়বে। বিশ্নেষকরা বলছেন, মসজিদে শুধু নামাজের সময়ই এসি চলে। এসির বেশি ব্যবহার অফিসগুলোতে। অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা এসি, পাখা ও বাতি ব্যবহারে সচেতন নন। সরকারি ভবনগুলো বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী নয়। দিনেও বাতি জ্বালাতে হয়। তাই বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারের অধিকাংশ পদক্ষেপ বাস্তবসম্মত নয় বলে তাঁরা মনে করেন।

অফিস সময় কমানোর চিন্তা :বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে অফিসের সময় কমানোর বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, অফিস সময় কমিয়ে হতে পারে অথবা ওয়ার্ক ফ্রম হোম করা হতে পারে। অথবা এ দুটিই হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। জানিয়েছে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস সময় নির্ধারণ হতে পারে। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সভা করোনার সময়ের মতো ভার্চুয়াল করার বিষয়েও ঘোষণা আসতে পারে। বুধবারের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে জনপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

সপ্তাহে এক দিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকতে পারে :বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সপ্তাহে এক দিন পেট্রোল পাম্প বন্ধের বিষয়ে মালিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। পাম্প মালিকরা সোম, মঙ্গল কিংবা বুধবার বন্ধ রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।এদিকে সরকারের এসব পদক্ষেপে খুব বেশি লাভ দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, লোডশেডিংয়ে শিল্প খাতের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশে কলকারখানা নির্দিষ্ট এলাকায় গড়ে ওঠেনি। ফলে চাইলেও কলকারখানাকে অগ্রাধিকার দেওয়া সেভাবে সম্ভব হবে না।