হালাল খাদ্যের বাজারে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা পাসের হার কমেছে ,জিপিএ-৫ বেড়েছে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসছে প্রতি ইউনিট ৯ টাকা ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ায় নিহত অন্তত ১৩বাসের ‘গেটলক সিস্টেম’ চালু হচ্ছে আজ
No icon

ঈদবাজারে ভোক্তা ঠকাতে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ

পোশাকের দাম কমানোর প্রতারণামূলক লোভনীয় অফার, যৌক্তিক দামের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দাম নেওয়া, দামি ব্র্যান্ডের পণ্য নকল করা, ওজনে কম দেওয়া, পণ্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করাসহ নানাভাবে ভোক্তাদের ঠকাচ্ছেন অসৎ ব্যবসায়ীরা। ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যেই এ ধরনের শত রকমের চাতুরতা দেখা যাচ্ছে তাদের। তবে রমজান ও ঈদুল ফিতরকে ঘিরে এই প্রবণতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।এসব অনিয়ম রুখতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিদিনই ভোগ্যপণ্যসহ নানা খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করছে। তবুও থামছে না অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য। এ পরিস্থিতিতে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে অধিদপ্তর। জরিমানার পাশাপাশি মামলা ও কারাদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।ভোক্তা-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, আইনে শিথিল প্রয়োগ ও নৈতিকতার অভাবে অতি লোভী হয়ে উঠছেন একশ্রেণির ব্যবসায়ী। তাদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে জনসচেতনতার পাশাপাশি আইনের আরও কঠোর প্রয়োগ করতে হবে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের কেউ ক্রেতাদের কাছ থেকে আসল পণ্যের দাম নিয়ে নকল পণ্য দিচ্ছেন। আবার কেউ টাকা নিয়েও পণ্য দিচ্ছেন না। কেউবা আবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করছেন। কেউ খাদ্যে মেশাচ্ছেন ভেজাল। অনলাইন এবং প্রথাগত- দুই ধারাতেই যে যার মতো করে ফাঁদ পাতছেন। এসব অনিয়মের মধ্য দিয়ে ভোক্তার পকেট কাটছেন অসৎ ব্যবসায়ীরা। সারা বছরই কমবেশি এ ধরনের অনিয়ম হলেও গত কয়েকদিন তা ব্যাপক হারে বেড়েছে।সাম্প্রতিক অভিযানে নানা ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের প্রমাণ হাতেনাতে পেয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের আইআরও নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একজন ক্রেতা ৫০ শতাংশ ছাড়ে দুই হাজার ৪৯০ টাকা দিয়ে একটি পাঞ্জাবি কেনেন। পরে তিনি বাসায় গিয়ে দেখেন ওই পাঞ্জাবির ভেতরে তিনটা ট্যাগে তিন ধরনের দাম রয়েছে। প্রথমটিতে লেখা রয়েছে দুই হাজার ৪৯০ টাকা, তার নিচে দ্বিতীয়টিতে লেখা এক হাজার ৭৯০ এবং সবচেয়ে নিচে তৃতীয় ট্যাগে লেখা এক হাজার ১৯০ টাকা। এ তথ্য দেখে তিনি ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন। অধিদপ্তর সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি পোশাকের কোনোটিতে তিনটি, আবার কোনোটিতে দুটি দাম লেখা দেখতে পায়। পরে তাদের জরিমানা ও সতর্ক করা হয়।

এভাবে গত এক মাসে বেশ কয়েকটি অনিয়ম পাওয়া গেছে। গত ২০ এপ্রিল বনশ্রীতে অবস্থিত পোশাক ব্র্যান্ড আর্টিসানের শোরুমে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। দেখা যায়, চারগুণ লাভে পোশাক বিক্রি করেছে আর্টিসান। একটি শার্টের প্যাকেটের গায়ে লেখা ১৬৯৫ টাকা। কিন্তু ভেতরে ট্যাগে লেখা ১১৯৫ টাকা। এ ছাড়া কোনো কোনো প্যাকেটের গায়ে লাগানো পণ্যমূল্য এবং বারকোড মুছে দেওয়া হয়েছে কালি দিয়ে।অস্বাভাবিক মূল্য আদায় করার প্রমাণ পাওয়া গেছে মিরপুরের বেনারসিপল্লিতেও। সেখানে মিতু কাতান শাড়ি ঘরে ১৭০০ টাকা দামের শাড়ি বিক্রি করা হচ্ছে ১৭ হাজার টাকায়। গোপন অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৬ এপ্রিল সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। একই জায়গায় ও তাওছিফ বেনারসি ফ্যাশনে তদারকি করে দেখা যায়, তাদের কাছে কোনো ক্রয় রসিদ নেই। ক্রেতাকে বিক্রয় রসিদও দেওয়া হয় না। শাড়িতে দেওয়া স্টিকারে এসএল নম্বর ও কোড দেওয়া থাকলেও কোনো মূল্য লেখা নেই।