ডেঙ্গুতে সারা দেশে চলতি বছর ঝরতে পারে ৪০ হাজার প্রাণ থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সফর শেষে আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রীহিট অ্যালার্টেও স্কুল, নগণ্য উপস্থিতির অনেকে অসুস্থদুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারত
No icon

এবারের বইমেলা নিয়ে প্রকাশকদের আগ্রহ কম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অমর একুশে বইমেলায় প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ এবং আয়োজন মাসব্যাপী না হলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন প্রকাশকরা। এ জন্য এবারের বইমেলা নিয়ে তাদের আগ্রহ কম।আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বসবে বইমেলা। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে এ নতুন তারিখ। তবে কবে শেষ হবে তা জানানো হয়নি। গতকাল সোমবার বাংলা একাডেমি স্টল বরাদ্দ দেয়। গত বছরের চেয়ে এ বছর স্টল সংখ্যা বেশি। কিন্তু এ বছরের মেলা জমবে কিনা- এ নিয়ে শঙ্কায় প্রকাশকরা। সময় বাড়ানো না হলে মেলা থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন কোনো কোনো প্রকাশক।বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয় সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল সমকালকে বলেন, বাংলা একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে। কিন্তু প্রকাশকদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দিয়ে মেলা ১৭ মার্চ পর্যন্ত চালানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির সঙ্গে বৈঠকেও একই অনুরোধ জানানো হবে। তিনি বলেন, মেলার সময়সীমা বাড়ানো না হলে প্রকাশকরা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। সেক্ষেত্রে প্রকাশকরা মেলা থেকে সরে দাঁড়াবেন। পার্ল পাবলিকেশন্সের প্রকাশক হাসান জাহিদি বলেন, এবারের মেলা নিয়ে তাদের বেশি প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বইমেলা নিয়ে সরকারের কঠিন বিধিনিষেধ তাদের হতাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, মেলায় প্রবেশকারীদের টিকা গ্রহণের সনদ দেখাতে হবে। সনদ ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে পাঠকের একটা অংশ বাদ পড়ে যাচ্ছে আগেই। এতে মূলধারার লেখকরাও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা গেলে এবারের মেলায় করোনা কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারবে না। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে প্রায় সবাই এবার বেশি বই প্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছেন।এশিয়া পাবলিকেশনের প্রধান নির্বাহী আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাঙালি এমনিতেই বই পড়তে চান না। তার ওপর এত শর্ত! দেশের আর কোনো জায়গায় এত কড়াকড়ি নেই। সব নিয়ম বইমেলার জন্য প্রযোজ্য। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই তারা এবার ধরে নিয়েছেন মেলায় তাদের লোকসান হবে। তা সত্ত্বেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে অংশগ্রহণ করছেন।


কথা প্রকাশনীর জাফিরুল ইসলাম বলেন, করোনার মধ্যে বইমেলার ওপর তাদের আস্থা নেই। সাহিত্য বিকাশ প্রকাশনীর পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, আমরা এবারের বইমেলায় যেতে চাচ্ছি না। অসময়ে মেলা করে গতবার আমরা এর খারাপ ফল পেয়েছি। আমরা অংশগ্রহণ করব না বলে টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেছি। যদি ফেরত দেয় তো ভালো। আর না দিলে বাধ্য হয়ে নামমাত্র অংশগ্রহণ করতে হবে।
অনিশ্চয়তার কারণে এবার বই কম প্রকাশ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। ফলে বইমেলার সময় ঘনিয়ে এলেও এবার প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানে তেমন ব্যস্ততা নেই। একুশে প্রিন্টার্সের পরিচালক অশিত পাল বলেন, বইমেলা ঘিরে বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর কাজ করছেন তারা। এর মধ্যে পার্ল পাবলিকেশন্সের ৭-৮টি বই ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রকাশনীর ৭০-৮০টি বই ছাপা হয়েছে বইমেলা উপলক্ষে। দুই বছর আগে যেভাবে কাজের চাপ থাকত, এখন তার অর্ধেকও নেই।জিয়া প্রিন্টার্সের এক কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার কাজের চাপ কম। তবে গতবারের তুলনায় একটু বেশি আছে। এবার তারা বইমেলা উপলক্ষে ১০-১২টা প্রকাশনীর অর্ডার পেয়েছেন।বই বাইন্ডিং কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের কাজের চাপ নেই। জননী বাইন্ডিং হাউসে কর্মরত শফিকুল আহমেদ বলেন, মেলা হবে কি হবে না, এই চিন্তায় প্রকাশনা সংস্থাগুলো। অর্ডারের ওপর ভিত্তি করে তাদের কাজ। আগে বইমেলার তিন মাস আগে থেকে তাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকত না। এবার তেমন কাজ নেই।