রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে তৈরি পোশাক খাতঢাকাসহ ৫ বিভাগে বৃষ্টির আভাস, অব্যাহত থাকবে তাপপ্রবাহপ্রতিদিন মা হারাচ্ছে ৩৭ ফিলিস্তিনি শিশুস্কুল-মাদ্রাসা খুলছে আজ, বন্ধ থাকছে ২৫ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানআজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস
No icon

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা স্বপ্নের ফাইনাল

কিছু বিতর্ক থাকে যা চিরন্তন, কিছু বৈপরীত্য থাকে যা শাশ্বত, কিছু আবেগ থাকে যা একান্তই আপন- সেখানে সমঝোতা চলে না। কিছু হলুদ কখনোই আকাশি-সাদা হয় না, আর আকাশি-সাদাও ভুল করে হলুদে রাঙায় না। মেরু আর মরু চাইলেও কাছাকাছি আসতে পারে না। তেমনি ফুটবলের মহাকাশেও মহাকালজুড়েই ভিন্ন কক্ষপথ বেছে নিয়েছে যে দুটি দল, সেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফাইনালে কেনই বা উত্তুঙ্গ আবেগের আগ্নেয়গিরির মুখ হয়ে থাকবে না। পঞ্জিকা কী বলছে জানা নেই, তবে রবির ভোরে ফুটবলের মহাকাশে যে পূর্ণগ্রহণ হতে চলেছে, তা এতক্ষণে জেনে গেছে সবাই। বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মাঝে ফুটবল নামক চর্মগোলক নব্বই মিনিট কিংবা তারও বেশি সময়ের জন্য হাজির হচ্ছে সুপার ক্ল্যাসিকো দি লাস আমেরিকাস। চৌদ্দ বছর পর আবারও দুই লাতিন প্রতিবেশী কোপার ফাইনালে মুখোমুখি। একটা প্রকাণ্ড কাঁপুনিতে ফুটবলবিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে মারাকানা। সেই মারাকানা যেখানে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে চোখের জল মুছতে হয়েছিল মেসিকে, এটা ব্রাজিলের সেই পয়া মারাকানা যেখানে আগের কোপার ফাইনালেই সেলেকাওদের মুকুট পরিয়ে দিয়েছিল। এবারও কি সে ভূমিপুত্র নেইমারদের জন্যই বুক পেতে রাখবে, নাকি ফুটবলের বরপুত্র মেসির জন্য তোলা রয়েছে তার ভালোবাসা- তা জানার জন্য হৃদয়ের একূল-ওকূল দুকূল ছাপিয়ে অপেক্ষা করতে হবে গোটা বিশ্বকে।

কে জিতবে এই ঐতিহ্যের লড়াই, কেই বা জিতবে এই শতাব্দীপ্রাচীন টুর্নামেন্টের এবারের শিরোপা? টুইটারে এখন পর্যন্ত পেলে নীরব। আর অন্য যে মানুষটি এ ম্যাচটি ঘিরে পূর্বাভাস দিতেন, সেই দিয়াগো আরমান্দো ম্যারাডোনা তো বুয়েনাস আয়ার্সের ঠিকানায় নেই। ওপার থেকেই তিনি হয়তো আশীর্বাদ করবেন মেসিকে। দেখতে চাইবেন, নিজের শেষ কোপা আমেরিকায় অন্তত দলের বাকি দশজন মিলে মেসিকে আর্জেন্টিনার হয়ে এই ট্রফিটি দিক। তিন-তিনবার কোপার ফাইনাল (২০০৭, ২০১৫, ২০১৬) উঠেও যিনি ট্রফির স্পর্শ পাননি, সেই মানুষটির যেন এবার শাপমোচন হয়। তাহলে অন্তত তাকে ওই খোটা শুনতে হবে না- আর্জেন্টিনার হয়ে কখনও কি শিরোপা জিতেছে সে? এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্রুশের মতো এ প্রশ্নটিই যে বিদ্ধ করে এসেছে তাকে। হৃদয়ের অতল থেকে প্রবলভাবে এ ইচ্ছাটি লালন করেই কাল ফুটবলের পূর্ণগ্রহণের ছায়াতলে থাকবে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা, আর ঠিক সে কারণেই এর বিপরীতটাই চাইবে ব্রাজিল সমর্থকরা। ২০১৩ কনফেডারেশন কাপ জেতা ছাড়া নেইমারের হাতেও তো ব্রাজিলের কোনো ট্রফি ওঠেনি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলা ইতিহাস আর সংস্কৃতি বলে মেসির প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মধ্যেই সমাপ্ত হবে একটি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা অধ্যায়; যা শুরু হয়েছিল ২০০৭ থেকে মেসির আগমনের পর থেকে। তবে ইতিহাস বলে, দুদলের স্নায়ুক্ষয়ের শুরু তাও প্রায় শতবছর আগে থেকে।