আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক আজ সর্বজনীন পেনশনের নিবন্ধন এক লাখ ছাড়াল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্কুল-মাদরাসা বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের নির্দেশমহাবিপদ এড়াতে এখনই সাজাতে হবে পরিকল্পনা ২৭ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ থাকবে আজ
No icon

নির্বাচন-পরবর্তী বিরোধ মেটাতে সিরিজ বৈঠকে আওয়ামী লীগ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের দলীয় ও স্বতন্ত্র এমপিদের এলাকায় অভ্যন্তরীণ বিরোধ তীব্র হয়ে ওঠে। উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাতে নতুন মাত্রা পায়। দলের এই বিরোধ মেটাতে এখন সিরিজ বৈঠকে বসছে আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার থেকে এ বৈঠক শুরু হবে। প্রথম দিনের বৈঠকে অংশ নিতে রংপুর বিভাগের ৯ সাংগঠনিক জেলার নেতারা আজ ঢাকায় আসছেন।প্রতিটি বৈঠকে সাংগঠনিক নির্দেশনা দেবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি নির্বাচন-পরবর্তী সব সাংগঠনিক বিরোধের নিষ্পত্তির পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন আয়োজনের তাগিদ দেবেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে ৩৩টি সাংগঠনিক জেলার আওতাধীন ৮৫টি উপজেলায় প্রকট গৃহদাহ সৃষ্টি হয়েছে।আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না আসায় ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল। তাদের ৫৯ জন নির্বাচনে জয়ও পেয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনের পরই বেশির ভাগ স্বতন্ত্র এমপি যে কোনো প্রক্রিয়ায় দলে চালকের অবস্থান নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হচ্ছেন গত সংসদের সাবেক এমপি কিংবা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী। ফলে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় স্পষ্ট দুই বলয়ে বিভক্ত হয়েছেন নেতাকর্মী। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে খুনাখুনির মতো নির্মম ঘটনার পাশাপাশি পরস্পর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হামলা-মামলা, পাল্টা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় এবং স্বতন্ত্র এমপিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গৃহদাহ ভুলে একসঙ্গে মিলেমিশে সাংগঠনিক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গে বৈঠকের তাগিদ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের।

এর পরই বিভাগ পর্যায়ে সাংগঠনিক বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, বিভাগীয় সাংগঠনিক বৈঠকের পর দলীয় ও স্বতন্ত্র এমপিদের এলাকায় নেতাকর্মীর মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না। দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদের রাজনীতিও দূর হবে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীর মধ্যে আসবে স্বস্তি।রংপুর দিয়েই শুরু হবে সিরিজ সাংগঠনিক বৈঠক। এ বিভাগের সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, শনিবার বেলা ১১টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও রংপুর মহানগরের নেতারা অংশ নেবেন। এ বৈঠকের মাধ্যমে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক বিরোধ মিটিয়ে ফেলা হবে।রংপুর বিভাগের ৩৩টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সাতটিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের অনেকেই নির্বাচনী এলাকায় দলের ভেতরে আলাদা বলয় তৈরির চেষ্টা করছেন বলে দলীয়ভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও কাহারোল; নীলফামারীর জলঢাকা, সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ; রংপুরের গঙ্গাচড়া ও মিঠাপুকুর; কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, রাজারহাট ও সদর; গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও সদর উপজেলার নেতাকর্মী বিভক্ত হয়ে আছেন।চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক বৈঠক আগামীকাল রোববার বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন এ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম মহানগরের নেতারা এ বৈঠকে অংশ নেবেন।