দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলবিএনপির আরও চার নেতাকে বহিষ্কারবিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুই প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি ঘোষণা রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ল রিলাক্স পরিবহনের বাস, নিহত ৫ আহত ১৫
No icon

কারফিউর মধ্যেও আগুন সেনারা নমনীয়

রক্তাক্ত রাজনৈতিক সংঘাতের পর শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি করা হলেও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার রাতেও দ্বিতীয় দিনের মতো সরকারি দলের নেতাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের দমনে সশস্ত্র বাহিনীকে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিলেও সেনারা ছিলেন সংযত। সেনাবাহিনীকে গুলি করার অনুমতি দেওয়ার খবর অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ।এদিকে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনীতিক সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে জনরোষ থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে খবর ছড়ালেও তা নাচক করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশটিতে ভারতের সেনা মোতায়েনের খবরও অস্বীকার করেছে দিল্লি।সরকারবিরোধী অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যে লুটেরাদের গুলি করার নির্দেশ দিয়ে শ্রীলঙ্কাজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাজার হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দেশব্যাপী কারফিউ থাকা সত্ত্বেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। কলম্বোর কাছাকাছি দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। মাহিন্দার ছেলের মালিকানাধীন একটি রিসোর্টেও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে গতকাল দিনে রাজধানী কলম্বো প্রায় জনশূন্য ছিল।

সোমবার থেকে সহিংসতায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন। দেশব্যাপী কারফিউর কারণে গতকাল বুধবার তৃতীয় দিনের মতো দোকান, ব্যবসা এবং অফিস বন্ধ ছিল। মেয়াদ না বাড়ালে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ চলবে। নিরাপত্তার অভাবে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত হয়।মঙ্গলবার দেশটির পুলিশ বলেছে, সোমবারের সহিংসতায় ৮৫টির মতো অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের এক এমপি, প্রাদেশিক সভার এক চেয়ারম্যান, পুলিশের এক উপপরিদর্শক এবং এক সার্জেন্ট রয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা ৪৭টি গাড়ি এবং ৩৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ছাড়া ৪১টি গাড়ি এবং ৬৫টি বাড়ি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া গাড়ির অধিকাংশই সাবেক মন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের।


জনরোষের ভয়ে মাহিন্দা সোমবার রাজধানী ছেড়ে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরের একটি নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নেন। তবে ওই নৌঘাঁটিও বিক্ষোভকারীরা ঘিরে রেখেছিলেন। এর মধ্যে মঙ্গলবারই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রটে যায়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভারতে পালিয়েছেন মাহিন্দা। তবে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাইকমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, মাহিন্দার ভারতের পালানোর খবর ভুয়া এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি সত্য বিবর্জিত খবর। হাইকমিশন জোরালোভাবে এই খবর অস্বীকার করছে।এদিকে অর্থনৈতিক সংকটকে ঘিরে বিক্ষোভ-আন্দোলনে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠানোর খবর জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে ভারত। মঙ্গলবার স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় ভারত সেনা পাঠাচ্ছে বলে দাবি করা হয়।গতকাল শ্রীলঙ্কায় ভারতের হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই অনুমাননির্ভর খবর সম্পূর্ণ নাকচ করছে ভারত। এই ধরনের সংবাদ এবং দৃষ্টিভঙ্গি ভারত সরকারের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।