বৃষ্টির পর আগামী সপ্তাহে আবার তাপপ্রবাহের শঙ্কানারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা আজদেশের ৮ বিভাগে হতে পারে টানা বৃষ্টিবিশ্ব কাঁপছে বিক্ষোভেআপিল বিভাগের দুটি বেঞ্চে বিচারকাজ চলবে আজ থেকে
No icon

জো বাইডেন কি পারবেন ট্রাম্প যুগের অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে

ছোটবেলায় ছবি দেখেছিলাম একটি ভয়ানক দানবের, নাম কিংকং, নিউইয়র্ক শহরের আকাশচুম্বী ভবনগুলোর একছাদ থেকে আরেক ছাদে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে সব কিছু ভাঙচুর করছে। তার বাহুর মধ্যে এক তরুণী, তাকে ছোট্ট পুতুলের মতো দেখাচ্ছে। প্রাণভয়ে সেই পুতুল কাঁদছে। তাকে রক্ষা করার কেউ নেই।বন্দুক, রাইফেল, কামান কোনো কিছুই দানবকে কিছু করতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত লোহার জাল আনা হলো, বহু কষ্টে সেই জালে তাকে বন্দি করে ছাদ থেকে নামিয়ে আনা হলো। জালবন্দি থাকাকালে কিংকংয়ের সে কী গর্জন! মনে হয় এই বুঝি জাল ছিঁড়ে মাটিতে নেমে এসে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করবে।বহুকাল পর বুড়ো বয়সে সেই একই কিংকং দানবের ছবি দেখলাম আমেরিকা নামক দেশটিতেই। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে হুঙ্কার দানরত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি দেখেছি। সে এক ভয়াবহ ছবি। পিকাসো এই ভয়ংকর মুখ পেলে নিঃসন্দেহে ছবি আঁকতেন। এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর জালবন্দি ট্রাম্পের ছবি দেখছি।মনে হয় জাল থেকে কিংকং হয়ে তিনি এখনই বেরিয়ে আসবেন। তার বাহুর তলে থাকবে সেই পুতুলের মতো তরুণী-আর্তস্বরে কাঁদছে। মনে হয় গোটা আমেরিকা সেই তরুণীর রূপ ধরে কাঁদছে। নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, নিজেই একজন অসুখী মানুষ। পারবেন কি এই আমেরিকার দুঃখ দূর করতে?

জো বাইডেনকে দেখলে তার আগের এক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের কথা মনে পড়ে। তিনি অসুখী মানুষ ছিলেন না। তার চীনা বাদামের ব্যবসা আর সুন্দরী স্ত্রী নিয়ে সুখী মানুষ ছিলেন। তিনি আমেরিকাকে মানবতাবাদী করবেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পারেননি।আমেরিকার এস্টাবলিশমেন্ট মানবতাবাদী নয়। তিনি দেশটাকে মানবতাবাদী করবেন কী করে? তিনি তার এস্টাবলিশমেন্টের একটা বড় আশা পূর্ণ করেছেন। তিনি ইসরাইলের পরমশত্রু মিসরকে ইহুদি রাষ্ট্রের পরম মিত্র বানিয়েছেন। আরব-ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছেন। প্যালিস্টিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের আশা-আকাঙ্ক্ষা গুঁড়িয়ে দিয়ে গেছেন।জিমি কার্টার যুদ্ধবাদী প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। জো বাইডেনও নন। আমেরিকার এস্টাবলিশমেন্ট ও অস্ত্র ব্যবসায়ী কার্টেলগুলোকে খুশি করতে না পারায় জিমি কার্টার মাত্র এক টার্ম প্রেসিডেন্ট পদে থেকে হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নিয়ে তার চীনা বাদামের ব্যবসায় ফিরে গিয়েছিলেন। জো বাইডেনের ভাগ্যে কী আছে তা বলা মুশকিল। তাকে একহাতে কোভিড-১৯-এর দানবের বিরুদ্ধে, অন্য হাতে ভয়াবহ ট্রাম্পইজমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। যুদ্ধে তিনি কতটা জয়ী হবেন সে সম্পর্কে মার্কিন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ততটা আশাবাদী নন।

জো বাইডেন অসুখী, তবে উচ্চাভিলাষী মানুষ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবেন এটা তার আজীবনের আকাঙ্ক্ষা। ভাগ্য তাকে বারবার আঘাত করেছে। তার সুখ ও সাফল্যের পথে কাঁটা বিছিয়ে গেছে। ১৯৭২ সালে বাইডেন যখন মাত্র ২৯ বছরের যুবক, সিনেটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তখন তার স্ত্রী নেইলা এবং মেয়ে নাওমী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।তারপর ছেলে বুয়ো মারা যান ক্যান্সারে। তারপর ঘটে আরেকটি বড় দুর্ঘটনা। কেউজ কোডের কাছে নালটাকেটে আটলান্টিকের পাড়ঘেঁষে ছিল তাদের পারিবারিক রিট্রিট। এই রিট্রিটে জো বাইডেনের গোটা পরিবার থ্যাঙ্কস গিভিং ডেতে জড়ো হতেন। গোটা পরিবার একসঙ্গে ছবি তোলেন।