খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমানবুধবার তফসিল ঘোষণা, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটজাপানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কাএখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারএক সপ্তাহে ১১ হাজার প্রবাসীকে ফেরত পাঠাল সৌদি
No icon

বুধবার তফসিল ঘোষণা, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল আগামীকাল বুধবার ঘোষণা করা হচ্ছে। এ দিন সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন তফসিল ঘোষণা করবেন। তফসিলে আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হতে পারে বলে জানা গেছে। তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেতারকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ রেকর্ড করতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই দিন যে কোনো সময় তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণটি রেকর্ড করা হবে। একই দিন দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সিইসি ও অন্য কমিশনাররা। ইসির একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী ট্রেন গন্তব্যের দিকে ছুটতে থাকবে। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা বা ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভালো নির্বাচন হওয়ার পূর্ব শর্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য, যা এখনও পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। একটি মহল এখনও নির্বাচন পেছানোর ওজুহাত খুঁজছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সে হিসাবে আগামী বছর ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার আরেকটি সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও আলোচনা আছে। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি হওয়ার সম্ভবনা বেশি।

যাচ্ছে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। প্রথম ধাপেই জাতীয় নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন দিয়ে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে এ কমিশন। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনে একটি বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া হতে যাচ্ছে। অতীতে বিএনপি ছাড়া নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া হলে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নির্বাহী আদেশে স্থগিত রয়েছে, তাই আইনগতভাবে দলটির ভোটে থাকার সুযোগ এই নির্বাচনে নেই।নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হবে। সেখান থেকে ফিরে বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করা হবে। রেকর্ড শেষে এদিন সন্ধ্যার দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তবে কোনো কারণে বুধবার তফসিল ঘোষণা না হলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে।ভাষণ রেকর্ড নিয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ডের জন্য বিটিভি ও বেতারকে ১০ তারিখে (বুধবার) ডাকা হয়েছে। তবে কোন সময় ভাষণটি রেকর্ড হবে, সেটা নিশ্চিত নয়। আগামী নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে নাম নিবন্ধন চলছে। ইসি সচিব জানিয়েছেন, পোস্টাল ব্যালটে যাঁরা ভোট দেবেন, তফসিল ঘোষণার পর তাঁরা ১৫ দিন সময় পাবেন রেজিস্ট্রেশনের জন্য। তবে যাঁরা সরাসরি নির্বাচনী কাজে যুক্ত থাকবে, তাঁদের কাছে এই সময়সীমা শিথিল থাকবে।

তফসিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, বিটিভি ও বেতারকে চিঠি দিচ্ছে ইসি সচিবালয়। ভাষণের মাধ্যমে তফসিল হবে। ১০ ডিসেম্বর হতে পারে। আর তো সময় নেই। ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল দিতে হবে।এর আগে গত রবিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে নির্বাচন কমিশন। ফেব্রুয়ারিতে একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার কথা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রস্তুতির বিষয়ে ইসিকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ধন্যবাদ জানান।এর আগে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এবার ভোটগ্রহণের সময় ১ ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে সকালে আধা ঘণ্টা ও বিকালে আধা ঘণ্টা সময় বাড়বে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে।নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ও নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম বলেন, একটি ভালো নির্বাচনের পূর্ব শর্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য। এটা এখনও অনুপস্থিত। একটা পক্ষ এখনও নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। এ ছাড়া ভালো নির্বাচনের জন্য তফসিল পূর্ববর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেমন থাকার কথা, সেই পর্যায়ে এখনও পৌঁছেনি। তিনি বলেন, ভালো নির্বাচন করার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের জন্য লিগ্যাসি থাকা দরকার। যাঁরা নির্বাচনটা নিয়ন্ত্রণ করবেন, সেই টিমের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করবে ভালো নির্বাচন। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, এই মুহূর্তে নির্বাচনের বিকল্প নেই।অন্যদিকে, নির্বাচনের আগে আরেক দফা আরপিও সংশোধন হচ্ছে। এ নিয়ে গতকাল সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় কাজ হয়েছে। আরপিওর কিছু জায়গায় পরিবর্তন করে জারি করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল রাত অথবা আজ মঙ্গলবারের মধ্যে সংশোধিত আরপিও অধ্যাদেশ জারি হওয়ার কথা রয়েছে। এতে যেসব শর্তাবলী শিথিল করা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আগে একটি সংসদীয় আসনে দৈনিক সর্বোচ্চ তিনটি মাইক ব্যবহারের বিধান ছিল; নতুন বিধানে সেই শর্ত শিথিল করা হয়েছে।