তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণাতীব্র তাপপ্রবাহ: ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি ভেজাল নকল পণ্যে সর্বনাশতাপমাত্রা আরও বাড়তে পারেতাপপ্রবাহ আরও কত দিন থাকবে জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর
No icon

নতুন পাঠ্যবই নিয়ে সংকটের আশঙ্কা

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আর মাত্র তিন মাস। এবার শিক্ষার্থীদের জন্য ছাপাতে হবে সোয়া ৩৩ কোটি পাঠ্যবই। কিন্তু এসব বই মুদ্রণ শুরু দূরের কথা, শনিবার পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। অথচ অন্যান্য বছর এই সময়ে ৬ থেকে ৭ কোটি বই ছাপা শেষ হয়ে যায়।এ বাস্তবতায় ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শুরুতে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক হাতে পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে ছাপা শুরু হলেও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ শতাংশ বা ১০ কোটির বেশি বই সরবরাহ করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয়, কাজ নেওয়া বেশকিছু প্রতিষ্ঠান শেষ পর্যন্ত বই দিতে পারবে কি না, সেই শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। কম দামে কাজ নেওয়ায় সাদা কাগজের পরিবর্তে নিউজপ্রিন্টেও ছাপা হতে পারে বই। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ১২টি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১টিরই নির্দিষ্ট মেশিন নেই। ফলে গত কয়েক বছরের মতোই শিক্ষার্থীরা এবারও ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ বই পেতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার পাঠ্যবই নিয়ে সৃষ্ট এই হযবরল অবস্থা তৈরির মূল কারণ ৩টি। প্রথমত, বিলম্বে শুরুর কারণে পাঠ্যপুস্তকসংক্রান্ত ৬টি দরপত্রের মধ্যে একটির প্রক্রিয়াও এখন পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি এনসিটিবি। ফলে বই ছাপার জন্য এখনো চুক্তি হয়নি। দ্বিতীয়ত, নতুন শিক্ষাক্রমে আগামী বছর ৪টি শ্রেণিতে বই দেওয়ার কথা। বিলম্বের কারণে প্রাথমিকের পাইলটিং (পরীক্ষামূলক প্রয়োগ) করা যায়নি। মাধ্যমিকে ষষ্ঠ শ্রেণির পাইলটিং কোনোমতে হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বই চূড়ান্ত হয়নি। তৃতীয়ত, ডলার, জ্বালানি তেল এবং কাগজসহ বই ছাপানোর অপরিহার্য উপাদানের দাম বৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের বিদ্যমান পরিস্থিতিও শঙ্কা তৈরি করেছে। বাজার এমন চড়া সত্ত্বেও মুদ্রাকররা গড়ে প্রাক্কলিত দরের (যে দামে সরকার বই ছাপতে চায়) চেয়ে ২৫ শতাংশ কম টাকায় দরপত্র দিয়েছেন। এতে কাক্সিক্ষত মানের বই পাওয়া যাবে কি না, তা বড় প্রশ্ন হিসাবে দেখা দিয়েছে।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, পাঠ্যবই নিয়ে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তৈরি হয়েছে এর দায় পুরোপুরি এনসিটিবির। কেননা যে দরে কাজ দেওয়া হয়েছে, তাতে অন্তত ৫০টি ফার্ম এবার বই-ই দিতে পারবে না। আবার অনেকের পক্ষে নিউজপ্রিন্টে বই সরবরাহ দূরের কথা, খালি কাগজ দিতে পারবে কি না, সেই সন্দেহও আছে। এই অবস্থায় কারও কারও লক্ষ্য থাকে বছরের শেষ সময়। কেননা বিতরণ সামনে রেখে তখন এনসিটিবি কেবল বই চায়, মান নয়। সেই সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ নিউজপ্রিন্টে বই দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। ওই পরিস্থিতিতে হয়তো নির্ধারিত ১ জানুয়ারির মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ বই যেতে পারে। তবে এনসিটিবি যদি দেরিতে প্রক্রিয়া শুরু না করত এবং নিুদরের দরপত্র বাতিল করে ন্যায্যমূল্যে কাজ দিত, তাহলে হয়তো এমন অবস্থা তৈরি হতো না।