ব্যাংক আলফালাহর ব্যবসা অধিগ্রহণ করবে ব্যাংক এশিয়াআজ এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট সেবাথাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীআনাড়ি হাতে ২০ টন ট্রাক, ফের সড়কে ঝরল ১৪ প্রাণইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র
No icon

শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিন

দেশে এ মুহূর্তে ৪৯টি সরকারি ও ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যদিও দীর্ঘ করোনা অতিমারি সারা বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থাকে অনেকটা স্থবির করে দিয়েছে। আমাদের অবস্থা আরও করুণ। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী চিহ্নিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে একই মাসের ১৭ তারিখ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। যার মেয়াদ অনেকবার বৃদ্ধি করে তা সর্বশেষ ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। বারবার সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেয়া হলেও তা বাস্তবে পরিণত হয়নি।দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানের এই ক্রমাবনতি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় ভিসি নিয়োগ, মেধার পরিবর্তে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগই এমন ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে দায়ী। এছাড়া গবেষণা খাতে অপ্রতুল অর্থ বরাদ্দ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পূর্ব ঘোষণা থাকলেও সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্টের চোখ রাঙানির ফলে তা আর সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জোরালো হওয়ার প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এক বছর পরীক্ষা না হলে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। অথচ যারা ভুক্তভোগী তারা বলছেন যে তারা সেশনজটে পড়ছে, বয়স বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু চাকরিতে আবেদন করার বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানো না হলে প্রকৃত অর্থেই শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

জীবন-জীবিকা, শিল্প-বাণিজ্য, উৎপাদন বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, কৃষি ও শিক্ষা সচল রাখতে হলে টিকাকরণই হলো এখন একমাত্র উপায়। তাই টিকা আমদানির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে দেশেই দ্রুত টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তা সত্ত্বেও আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। দেশের শিক্ষাক্ষেত্র স্থবির। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চাবি এখন করোনা টিকার হাতে। দিন দিন দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি শিক্ষার গুণগত মান।গত দুই দশকে শিক্ষার গুণগত মানের নিম্নমুখীধারা দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা কিছুদিন আগে পর্যন্ত গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির ওপর ন্যস্ত ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য বা তাদের মনোনীত ব্যক্তিরাই ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও এখন আর তা সম্ভবপর নয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় এমন ব্যক্তিরা শিক্ষার উন্নয়নে যতটা না আগ্রহী তার চেয়ে হাজারগুণ বেশি আগ্রহী ছিলেন অনিয়ম, দুর্নীতি ও সীমাহীন স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ প্রদানে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে মেধাবী নয় বরং নিয়োগ পেয়েছেন মেধাহীন ব্যক্তিরা।

একজন শিক্ষক ৩০-৪০ বছর শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদান করেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এমন মেধাহীন শিক্ষক জাতি গঠনে অবদান রাখা তো দূরের কথা বরং মেধাহীন উচ্চশিক্ষিত বেকার তৈরি করতে ভূমিকা রাখবেন। আমাদের দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে গবেষণা ও প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। ফলে জ্ঞান বিজ্ঞানের নতুন নতুন শাখা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত হলেও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক তৈরি করার ক্ষেত্রে বরাবরই আমরা অনীহা প্রকাশ করে আসছি। শহরের চেয়ে গ্রামীণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তার শিক্ষকদের অবস্থা আরও শোচনীয়।