৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি আসছে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেঢাকাসহ তিন বিভাগে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতাপ্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক আজএক এনআইডিতে ১০টির বেশি সিম ব্যবহার করা যাবে নাআজ থেকে সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন পর্যটকরা
No icon

এক এনআইডিতে ১০টির বেশি সিম ব্যবহার করা যাবে না

একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম রাখা যাবে না। এর বেশি সক্রিয় সিম থাকলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। গতকাল শনিবার কার্যকর হয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এই নতুন নির্দেশনা। এর আগে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহার করতে পারতেন।বিটিআরসি দাবি করছে, অতিরিক্ত সিম দিয়ে প্রতারণাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। এ জন্য ব্যক্তিগত সিমের সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে মোবাইল অপারেটররা বলছে, সিমের সংখ্যা কমালেই যে অপরাধ কমবে এই ধারণা ঠিক নয়। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত ব্যবহারের বাইরেও গাড়ি, নোটবুক, সিসিক্যামেরাসহ বিভিন্ন ডিভাইসে (আইওটি) সিম ব্যবহার বাড়ছে। সংখ্যা কমালে এ খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।এ বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী বলেন, অতিরিক্ত সিম দিয়ে ভেহিকেল ট্র্যাকারসহ বিভিন্ন ধরনের আইওটি ডিভাইস চালানো হতো। তবে এখন আইওটি সিমগুলো একেবারেই আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অতিরিক্ত সিম রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি বলেন, ধাপে ধাপে একক ব্যক্তির নামে সিমের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে চাপ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, সিম সংখ্যা কমিয়ে আনলেই অপরাধ দমন হবে, এমনটি ভাবা ঠিক নয়। প্রতারণা কীভাবে কমানো যাবে, সেদিকে নজর দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের মতো ছোট গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, অতিরিক্ত সিম বিভিন্ন অপরাধের কাজে ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় ব্যক্তি জানেনও না তার নামে সিম তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির নামে ১০টি সিমও বেশি হয়ে যায়। সিম কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত সঠিক বলে তিনি মনে করেন।একক নামে কত সিম আছে, সেটা জানা যাবে *১৬০০১# ডায়াল করে। ১০টির অতিরিক্ত সিম গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে ডি-রেজিস্টার করতে পারবেন।বিটিআরসির মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছয় কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার। বিক্রি হওয়া সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। পাঁচটি বা এর কম সিম রয়েছে ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের। পাঁচ থেকে ১০টি পর্যন্ত সিম রয়েছে ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের। ১১ থেকে ১৫টি পর্যন্ত সিম রয়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের।

যেভাবে অতিরিক্ত সিম বন্ধ হবে

বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে ১ নভেম্বর থেকে কাজ করবে বিটিআরসি। এই কাজ ধাপে ধাপে করা হবে। যাদের অতিরিক্ত সিম আছে, তাদের তালিকা করে কোন অপারেটরের কয়টা সিম আছে, তা আগে নির্ধারণ করা হবে। তার পর অপারেটরগুলোকে অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে বলা হবে। এ ক্ষেত্রে অপারেটরগুলো সবচেয়ে কম ব্যবহৃত সিমটি বন্ধ করে দেবে। গত ১৯ মে বিটিআরসির কমিশন সভায় ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সিমের সংখ্যা ১৫ থেকে ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে ২৬ লাখ গ্রাহকের ৬৭ লাখ সিম বন্ধ হবে। ২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করা যাবে বলে নির্দেশনা দিয়েছিল বিটিআরসি।কমিশন সভার কার্যপত্রে বলা হয়, এতগুলো সিম একজন গ্রাহক ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা, অপারেটরদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলন চর্চা বিবেচনায় একজনের নামের বিপরীতে সিম সর্বোচ্চ ১০টি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, দেশে প্রতি মাসে ৫০ লাখ সিম বিক্রি হয়। গ্রাহকের সিম নিবন্ধনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, একজন গ্রাহক এক দিনে দুই বা ততোধিক সিম নিবন্ধন করছেন, যা অস্বাভাবিক। কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ) সংরক্ষণ করে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করে থাকেন, যা ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।