দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদসহ যেসব প্রস্তাব চূড়ান্ত করল বিএনপিইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে: পুতিনগুমের সঙ্গে জড়িতরা রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব৫ দেশ ভ্রমণে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতাইসরায়েলি হামলায় লেবাননে একদিনে নিহত ৫৯
No icon

ফেব্রুয়ারিতেও থাকবে শীত

সারাদেশে এখন একটাই আলোচনা- শীত। হাড়কাঁপানো শীতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যস্ত সবাই। অন্যান্য বছরে রাজধানীর নাগরিক জীবনে খুব একটা শীতের প্রভাব না পড়লেও এবার পড়েছে। ফলে গ্রামীণ জীবনের কষ্ট কিছুটা হলেও টের পাচ্ছেন শহুরে মানুষ। তবে ২০১৮ সালের ৭ ও ৮ জানুয়ারির কথা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন। এ দু দিন ৬৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছিল ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার পর থেকে শীত উধাও। সকাল-সন্ধ্যা খানিকটা হালকা কুয়াশা পড়ে, তার সঙ্গে একটু হিমেল হাওয়া। ব্যস, শীতের নাচন এখানেই শেষ। পাঁচ বছর পর দূর হয়েছে শীত নিয়ে হাপিত্যেশ। সারাদেশে কামড় বসিয়েছে ঠান্ডা। সর্বত্রই শীতের দাপটে জবুথবু অবস্থা। পুরোনো রেকর্ড না ভাঙলেও শীত অনুভব হচ্ছে বেশি। অবশ্য এ জন্য নানা কারণও দেখাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। কেউ দায়ী করছেন জলবায়ু পরিবর্তনকে, আবার কেউ বলছেন এবার প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই শীত পড়ছে।যে যা-ই বলুক, এখনই শীত থেকে রেহাই মিলছে না; বরং বাড়তে পারে তীব্রতা। এমন অবস্থা থাকতে পারে জানুয়ারি মাসজুড়ে। ফেব্রুয়ারিতেও বইতে পারে দুটি শৈত্যপ্রবাহ।

গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এবারের শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় গতকাল এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।তাপমাত্রা খুব বেশি না নামলেও পাঁচ কারণে এবার শীতের অনুভূতি বেশি হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। তিনি বলেন, দেশে দিন-রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম থাকছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম। মাঝরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত, কখনও আবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত থাকে দেশ। ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশের দিকে প্রায় ২০০ মিটারের একটি কুয়াশার স্তর থাকে। এর কারণে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে আসতে পারছে না। ফলে ভূপৃষ্ঠ এবং এর সংলগ্ন বাতাসের উষ্ণতা বাড়তে পারেনি। ভারতের হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রা অনেক কম। শীত মৌসুমে সাধারণত ওই সব এলাকা (উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক) থেকে বাংলাদেশমুখী বাতাসের গতি থাকে। সেটাও শীতল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মেঘমুক্ত আকাশ।

সাধারণত আকাশ মেঘলা থাকলে বিকিরণ প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ শীতল হতে সময় লাগে। তাপমাত্রা ভূপৃষ্ঠে বেশিক্ষণ থাকতে পারে। ফলে ধরণি শীতল হতে না হতেই নতুন দিনে সূর্যের আগমন ঘটে। এতে মেঘমুক্ত আকাশ ধরণিকে দ্রুত শীতল করে। পাশাপাশি দীর্ঘ রাত সূর্যের আগমন বিলম্বিত করে। এসব কারণ উপস্থিত থাকায় ঊর্ধ্বাকাশের বাতাসের গতির জেট এক্সট্রিম (শীতল বাতাসের লাইন বা যেখানে তাপমাত্রা জিরো ডিগ্রি) নিচে নেমে এসেছে। এসব কারণ মিলিয়েই বাংলাদেশে শীতের প্রকোপ বেড়েছে।তিনি আরও বলেন, আগামী দু-এক দিন এই শীতের অনুভূতি থাকতে পারে। দুই দিনের মধ্যে কুয়াশা কিছুটা কাটতে শুরু করবে। এতে রোদ বেড়ে তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। কমতে থাকবে শীতও।গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুপুরে দেশের কয়েকটি জেলায় কয়েক ঘণ্টার জন্য রোদের দেখা পাওয়া গেলেও গতকাল সূর্যের মুখ দেখা মেলেনি। সকাল থেকে দিনভর শীতের তীব্রতা ছিল, সন্ধ্যার পর হিমেল হাওয়ার সঙ্গে আরও জেঁকে বসে ঠান্ডা। পাঁচ দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম। দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ মৃদু থাকলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে এলে সেখানে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।