রাজধানীসহ সারাদেশের জনজীবন ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকার মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। শুক্রবার দুপুরের দিকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও কমেনি শীতের তীব্রতা।ছুটির দিন শুক্রবারের সকাল ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এমন অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। ধাপে ধাপে আরও দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে জানুয়ারি মাসে। শুক্রবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ২ এবং সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তা ছাড়া দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া, দিনাজপুর, যশোর ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, শীতের এই দাপট আরও দিন দুয়েক থাকতে পারে। তবে দুপুরে রোদ বেড়ে শীত কিছুটা কমতে পারে। বিকেলে হিমেল বাতাস বেড়ে আবারও শীত বেশি অনুভূত হতে পারে।রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় সড়ক ও নৌপথে যানবাহন চলাচলে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক এলাকায় ঘন কুয়াশার কারণে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরের জিনিস দেখা যাচ্ছে না।শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ। বিশেষ করে হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় জেলার সর্ব উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়ায় অনুভূত হচ্ছে হাড়কাঁপানো শীত। সেখানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। চার দিন ধরে ভালোভাবে দেখা মিলছে না সূর্যের। দিনে বেশিরভাগ সময়ই হেডলাইট জ্বেলে সড়কে চলাচল করছে যানবাহন।মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এতে রিকশা-ভ্যানের চালকদের আয় কমে গেছে। শীতের মধ্যে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে দিনমজুরদের।পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ভ্যানচালক আনছারুল বলেন, সকালে ভ্যান ধরে বাহির হইচু। কনকনে ঠান্ডা বাতাস বহচে। এতডা বেলা হইল তাহাও রোদ নাই। ঠান্ডায় কাঁপেছু। বাতাসে হাত-পাও জড়ো হয়ে আসেচে। কিন্তু কী করিবেন, খাবা তো নাগিবে।কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলসহ ৯ উপজেলার গ্রামগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাসিন্দারা আগুন জ্বেলে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। নদ-নদীর অববাহিকায় ঘন কুয়াশা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সারা রাত কুয়াশা পড়ছে।