NEWSTV24
বিকেলে কঠোর সমালোচনা, রাতে স্বাগত জানাল বিএনপি
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৫ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে দলের প্রতিক্রিয়ার বিষয় জানান।তবে এর আগে বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার কঠোর সমালোচনা করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভাষণের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিজের সই করা জুলাই জাতীয় সনদ লঙ্ঘন করেছেন। রাষ্ট্রের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির পরিবর্তে অনৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে কিনা এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, বিভাজনের দায়দায়িত্ব কি প্রধান উপদেষ্টা নেবেন?

স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকে গত ১৭ অক্টোবর ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদের ওপর জনগণের সম্মতি গ্রহণের জন্য গণভোট অনুষ্ঠান এবং যথাশিগগির জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি জানান, জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করায় এবং সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ায় স্থায়ী কমিটির সভায় তাঁকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা সনদ লঙ্ঘন করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয়ভাবে কি আমরা কোনো বিভাজন সৃষ্টি করতে যাচ্ছি?

হয়তো এখানে কোনো কোনো পক্ষ খুশি হতে পারে। গুলশানে নিজ বাসায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদে প্রধান উপদেষ্টা স্বাক্ষর করেছেন। সেটি তিনি লঙ্ঘন করেছেন তাঁর ভাষণের মাধ্যমে। সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে নোট অব ডিসেন্টে মীমাংসিত। এটি নতুন করে আরোপ করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া সংবিধান সংস্কার পরিষদ নামে যে বডি, সেটি জাতীয় সংসদের কোনো পর্যায়ে গঠন, ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার বিষয় ছিল না। এটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা। সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা কয়েক দিন আগেও দলের অবস্থান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছি। বলেছি, সনদের বাইরের কোনো বিষয় যদি আরোপ করা হয়, তার সঙ্গে একমত হবো না এবং স্বাক্ষরে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সেটি কোনো বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করবে না। আজও বলতে চাই, যে আদেশটা জারি করা হয়েছে, সেটির মধ্যে অনেকগুলো আছে নিত্যনতুন, তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রস্তাবগুলো করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই স্বাক্ষরিত হয়েছে। সনদের কপিগুলোতে প্রস্তাব এবং এর বিপরীতে দলগুলোর সম্মতি এবং নোট অব ডিসেন্ট, নোট অব ডিসেন্টের ভাষা সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এটি কোনো প্রথাগত নোট অব ডিসেন্ট নয়, ভিন্নমত নয়। সুনির্দিষ্টভাবে এই ভিন্নমত যদি দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে এবং জনগণের ম্যান্ডেট প্রাপ্ত হয়, তাহলে তারা সেভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিতে পারবে। এখন সেই জায়গা থেকে কি সরে আসা হলো না? এ জন্যই বলছি যে, প্রধান উপদেষ্টা নিজের স্বাক্ষরিত দলিলের বাইরে গেলেন, সেটি লঙ্ঘনের শামিল।