বাংলাদেশে থাকা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মাধ্যমে ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। সোমবার ঢাকার জাপান দূতাবাস এবং ডব্লিউএফপির পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।ডব্লিউএফপি জাপানের প্রায় ৩৪ লাখ ডলারের সময়োপযোগী অবদানের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে, যা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় উভয়ের জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তায় ব্যয় করা হবে।ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা পূরণে এবং স্থানীয় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সদস্যদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের সহায়তায় জাপান দৃঢ়ভাবে পাশে রয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরে ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং মানবিক সহায়তার তীব্র ঘাটতি নিয়ে জাপান গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। মানবিক সংকট যাতে আরও না বাড়ে এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিত হয়, যেখানে রোহিঙ্গারা নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরতে পারে, এ নিয়ে জাপান ডব্লিউএফপিসহ সব অংশীদারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জাপানের এ অর্থের মাধ্যমে ডব্লিউএফপি এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা ও দুই হাজার ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশিকে প্রতি মাসে খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা দেবে। পরিবারগুলো ক্যাম্পের দোকান থেকে চাল, ডাল এবং তাজা শাকসবজি কেনার জন্য ই-ভাউচার পাবে। রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে ও বাইরে অপুষ্টি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ছোট শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যদানকারী নারী এ বিশেষ পুষ্টি সহায়তা পাবেন।২০২৪ সালের শুরুর পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তীব্র লড়াইয়ের কারণে প্রায় দেড় লাখ নতুন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিবিরে এসেছে। ফলে মোট জনসংখ্যা ১১ লাখ অতিক্রম করেছে। চাহিদা বাড়তে থাকলেও আন্তর্জাতিক অর্থায়নের তীব্র ঘাটতি পুরো মানবিক প্রতিক্রিয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। খাদ্য, রান্নার গ্যাস, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সুরক্ষা সেবা মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়েছে। যদি দ্রুত আগামী ছয় মাসের জন্য ছয় কোটি ডলার এবং আগামী ১২ মাসের জন্য ১৬ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থায়ন নিশ্চিত না হয়, তবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেলি বলেন, আমরা জাপানের অংশীদারিত্ব ও দেশটির জনগণের উদারতার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। পরিস্থিতি এখন একটি সংকটময় মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা সব অংশীদারকে আহ্বান জানাই, রোহিঙ্গা শিবিরের মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতির আগে এগিয়ে আসার জন্য। ২০১৭ সালের আগস্টে জরুরি পরিস্থিতির শুরু থেকে জাপান বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ২৪ কোটি ডলারেরও বেশি সহায়তা করেছে।