আবুধাবির যে পাঁচতারা হোটেল রোটানায় গতকাল বুধবার চেকআউট করেছেন লিটনরা, সেখানেই দুবাই থেকে এসে উঠেছেন আসালাঙ্কারা। তাদের দেখা হয়েছে কিনা জানা যায়নি। হলে হয়তো আজকের ম্যাচের জন্য লঙ্কান অধিনায়ককে শুভকামনা জানিয়ে রাখতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কারণ, এই শহরে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা ম্যাচটিতে লিটনদের দেখার চোখ আর খোঁজার মন যে মিলে গেছে একসঙ্গে। দৃষ্টি প্রদীপের প্রেক্ষণে আজ লঙ্কার জয় এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশকে। কলম্বোর নাগিন ড্যান্স দিল্লির টাইমড আউট সব ভুলে আজ তাই কেবল লঙ্কার সঙ্গে বন্ধুত্ব। অবশ্য আফগানিস্তান জিতলেও সম্ভাবনা থাকবে লিটনদের। তবে সে বিজয় হতে হবে বুর্জ খলিফার মতোই সুউচ্চ। যেখানে রানরেটে শ্রীলঙ্কাকে পিছিয়ে ফেলতে হবে বাংলাদেশের চেয়ে!
এখন ক্যালকুলেটর নিয়ে হিসাব করা যাক, রানরেটের অঙ্কটা কী। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের তিন ম্যাচে দুই জয় নিয়ে ৪ পয়েন্ট, সঙ্গে রানরেট মাইনাস ২.১৫। আজ যদি শ্রীলঙ্কা জিতে যায়, তাহলে তাদের হবে ৬ পয়েন্ট; আফগানিস্তান বাদ পড়বে ২ পয়েন্ট নিয়ে। এখন যদি আফগানিস্তান জিতে যায়, তাহলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৪। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পয়েন্টও দাঁড়াবে ৪ করে। অর্থাৎ তিন দলের ৪ পয়েন্টে সুপার ফোরের দরজা খুলবে তখন রানরেট দেখে। এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার রানরেট ১.৫৪ আর আফগানিস্তানের ২.১৫। এই হিসাবে বাংলাদেশের সুপার ফোরে যাওয়ার সম্ভাবনা একটাই যদি শ্রীলঙ্কার রানরেটে বাংলাদেশের চেয়ে কম, অর্থাৎ মাইনাস ২.১৫-এর নিচে থাকে। সেটিও অসম্ভব নয়। তবে বাস্তবতার নিরিখে তা অবশ্যই জটিল।অঙ্কটা কষার জন্য একটা উদাহরণ ধরেই এগোনো যাক। ধরি, আজ আফগানিস্তান আগে ব্যাট করে ১৬০ রান তুলল। সে ক্ষেত্রে তারা যদি ৯১ রানের মধ্যে লঙ্কাকে অলআউট করে দিতে পারে, তাহলে সুপার ফোরে চলে যাবে বাংলাদেশ। আবার আফগানিস্তান যদি ১৮০ রান করে, সে ক্ষেত্রে ১০৯ রানের মধ্যে লঙ্কাকে অলআউট করতে হবে। তাহলেও বাংলাদেশকে নিয়ে সুপার ফোরে চলে যেতে পারে আফগানিস্তান। আবার শ্রীলঙ্কা যদি প্রথমে ব্যাট করে ১৬০ রান তোলে, তাহলে আফগানিস্তানকে তা ১০ থেকে ১২ ওভারের মধ্যে তুলে ফেলতে হবে।
তবে এই হবে হারের দায়ভার কেন নেবে আফগানিস্তান! বাংলাদেশের কাছে হারের পর তারা আজ নিশ্চিতভাবেই চাইবে যে কোনো মূল্যে লঙ্কার সঙ্গে জয়টি ছিনিয়ে নেওয়ার। আসলে সেদিন হংকংয়ের সঙ্গে ম্যাচটিতে রানরেট বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল ম্যাচটি ১৪ ওভারের মধ্যে শেষ করে, সেখানে কিনা ১৭.৪ ওভার লাগিয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়রা। একটু কি আফসোস হচ্ছে না তা নিয়ে? তানজিদ তামিমের উত্তর, যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন আর ওসব নিয়ে ভেবে কী হবে! আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে জিততে চেয়েছিলাম। সেটি পেরেছি। মুখে আফসোস নেই বললেও বলার ভঙ্গিতে তার রেশ ঠিকই ছিল। টুর্নামেন্টগুলোতে প্রতিটি দল শুধু জয় নয়, রানরেটের ব্যাপারটিও মাথায় রাখে।সেখানে আফগানিস্তানের সঙ্গেও হিসাবে কিছুটা গন্ডগোল হয়ে গেছে। এদিন মুস্তাফিজ যদি ১৯তম ওভারে নুর আহমেদকে রানআউটটি করতে পারতেন, তাহলে ৮ নয়; ৩০ রানের জয় পেতে পারত বাংলাদেশ। পরের ওভারটিতে উইকেট নেওয়ার চিন্তা করে তাসকিন নুরকে যে বলগুলো করলেন, তা থেকে অন্তত ২২টি রান বেচে যেত। তবে তানজিদের মতো ভাবতে হবে আসলে এখন আর ওসব নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। আপাতত আজকের ম্যাচে লাল-সবুজের পূর্ণ সমর্থন লঙ্কানদের সঙ্গে।